মর্মান্তিক: মিলন মেলার কাছে এই জায়গাতেই মা উড়ালপুল থেকে পড়ে যান ওই যুবক। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
মিলন মেলার কাছে সার্ভিস রোডে মা উড়ালপুলের একটি স্তম্ভের নীচে জোর শব্দে কোনও কিছু পড়ার আওয়াজে চমকে উঠেছিলেন সেখানকার নির্মাণ শ্রমিকেরা। তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখেন স্তম্ভের নীচে, সার্ভিস রোডের উপরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক যুবক। কিছু ক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে ওই যুবককে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। সোমবার রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। তবে যে উড়ালপুলে হাঁটা নিষেধ সেখানে পুলিশের নজর এড়িয়ে ওই যুবক কী করে ওই জায়গায় পৌঁছলেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
মা উড়ালপুলে সিসিটিভি ক্যামেরার নজরদারি রয়েছে। সেখানে পুলিশের টহলদারিও চলে।
এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ ওই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান,ওই যুবক ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর বয়স পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে। এমন ঘটনা সেখানে প্রথম বলেই পুলিশের দাবি।
পুলিশ জানায়, যেখান থেকে ওই যুবক ঝাঁপ মেরেছেন সেটি উড়ালপুলের সব থেকে উঁচু অংশ। ঘটনাটি উড়ালপুলে পার্ক সার্কাস থেকে গড়িয়াগামী রাস্তায় ঘটে। সেখানে পৌঁছতে হলে পার্ক সার্কাস অথবা রবীন্দ্রসদন— যেখান থেকে উড়ালপুলের ওই রাস্তাটি উঠছে সেখান থেকে ওই যুবককে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে উঠতে হবে। অথবা ওই রাস্তাটি যেখানে গিয়ে নামছে সেই সায়েন্স সিটির দিক থেকে তাঁকে উঠে আসতে হবে। আর যদি ওই যুবক গাড়ি করেও ওই জায়গায় পৌঁছন, তা হলেও তিনি উড়ালপুলের উপরে পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে কী করে সেখানে গাড়ি থামিয়ে নামলেন তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।
মা উড়ালপুলে ওঠানামার রাস্তার মুখেই পুলিশ থাকে। প্রগতি ময়দান থানা বাদেও সংশ্লিষ্ট এলাকার ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকদেরও মা উড়ালপুলের উপর সিসিটিভির নজরদারির করার কথা।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তার ব্যাখ্যা, রঙের কাজ করতে শ্রমিকেরা পায়ে হেঁটেই মা উড়ালপুলের উপরে ওঠেন। তেমনই কোনও শ্রমিক উপরে উঠেছিলেন কিনা তা দেখা হচ্ছে। ওই যুবকের পরিচয় জানলে সবটা পরিষ্কার হবে।
যুবকের পরনে ছিল কালো- সাদা গেঞ্জি, খয়েরি রঙের প্যান্ট। পায়ে ছিল বেল্ট বাঁধা জুতো। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই যুবকের পকেটে কোনও পরিচয়পত্র মেলেনি। শুধু কিছু টাকা ও খুচরো পয়সা মিলেছে।