প্রতীকী ছবি।
সোনারপুরে অপহৃত এক যুবককে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। অপহরণের অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম রাই শিরনু, অনিল গাদি, রাজু ডেঙ্গলা ও ইলমাচেলি শিরনু। শনিবার অপহৃত যুবক ও চার ধৃতকে সোনারপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। এ দিন ধৃতদের বারুইপুর আদালতে তোলা হলে সাত দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোনারপুরের দক্ষিণ জগদ্দলের বাসিন্দা ঊষারানি ১২ জুন তাঁর ভাইকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে তিনি জানান, বিশাখাপত্তনম থেকে ৭০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসছে। এর পরেই সোনারপুর থানার একটি দল অন্ধ্রপ্রদেশ রওনা দেয়।
পুলিশকর্তাদের দাবি, আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ঊষারানি বছর পাঁচেক ধরে দক্ষিণ জগদ্দল এলাকায় ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। তিনি বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় ‘জব প্লেসমেন্ট’-এর কাজ করেন। কয়েক জনকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া বাবদ প্রায় সাত লক্ষ টাকা কমিশন বকেয়া ছিল। সেই টাকা আনতেই গত ৯ জুন ভাই পুক্কালি আমিনকে হাওড়ার একটি হোটেলে পাঠান তিনি। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে পুক্কালির মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, ১১ জুন ঊষারানিকে ফোন করে ৭০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী। টাকা না দিলে পুক্কালিকে খুনের হুমকিও দেয় তারা। এর পরেই পুলিশে যান ঊষারানি।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, জেলা পুলিশের দল বিশাখাপত্তনম পৌঁছনোর পরে তদন্তকারীদের নির্দেশ মতো ঊষারানি অপহরণকারীদের জানান, হাওয়ালা মারফত মুক্তিপণের টাকা দেওয়া হবে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘বিশাখাপত্তনমে স্থানীয় এক অটোচালককে হাওয়ালাদারের এজেন্ট পরিচয় দিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলানো শুরু হয়। ঊষারানিকে দিয়ে তাদের জানানো হয়, ওই অটোচালক মারফত হাওয়ালায় টাকা পাঠানো হয়েছে। ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করলে টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু তা মিলবে পুক্কালিকে ফেরত দেওয়ার পরেই।’’ তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, ২৩ জুন রাতে স্থানীয় হোটেলে অপহরণকারীদের টাকা নিতে ডাকেন ওই অটোচালক। সেখানেই পুক্কালিকে উদ্ধার করেন পুলিশ আধিকারিকেরা। পাকড়াও করা হয় চার অপহরণকারীকেও। পরের দিন ধৃতদের ট্রানজ়িট রিমান্ডে নিয়ে শনিবার শহরে আনা হয়।
এ দিন থানায় পুক্কালি বলেন, ‘‘হাওড়ার হোটেলের ঘরে ঢুকিয়ে আমাকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করা হয়। এর পরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গাড়িতে বিশাখাপত্তনম নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’’ তিনি আরও জানান, মুক্তিপণ নিয়ে তাঁকে খুন করে দেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করার ছকও কষেছিল অপহরণকারীরা।
পুলিশের অনুমান, ধৃতেরা আন্তঃরাজ্য অপহরণকারী দলের সদস্য। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে চক্রের বাকি সদস্যদের হদিস পাওয়ার চেষ্টা চলছে।