দৃশ্য ১) বিধাননগর আদালত চত্বরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন দুই ব্যক্তি। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিতে মিলল না কোনও অ্যাম্বুল্যান্স। শেষে থানার গাড়ি করেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল।
দৃশ্য ২) শপিং মলে দুর্ঘটনার সময়ে অ্যাম্বুল্যান্স খুঁজে সময় নষ্ট করাই হয়নি। পথচলতি মানুষ আর স্থানীয় অটোচালকেরা রিকশায় করে আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে মৃত্যু হয় সেই ব্যক্তির।
দৃশ্য ৩) নিউ টাউনে লরি ও গাড়ির সংঘর্ষ। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেখাই মিলল না অ্যাম্বুল্যান্সের।
এগুলি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় একাধিক দুর্ঘটনা হলে ছবিটা কমবেশি একই রকম। অথচ বিধাননগর পুলিশের নিজস্ব তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। প্রয়োজনের সময়ে সেগুলি থাকে কোথায়, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।
পুলিশ সূত্রের খবর, একটি বিমানবন্দর ডিভিশনে, দ্বিতীয়টি নিউ টাউন এবং তৃতীয়টি সল্টলেকের করুণাময়ীতে দাঁড় করানো থাকে। কিন্তু কেন সেই সব অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হচ্ছে না? পুলিশের অবশ্য দাবি, অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পরে অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছনোর জন্য অপেক্ষা করা সম্ভব হয় না। সে কারণে হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, তাতে করেই রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত আহতদের হাসপাতালে নিয়ে না গেলে আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে দাবি সল্টলেক পুলিশের একাংশের।
যদিও এই যুক্তি মানতে নারাজ বাসিন্দারা। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, তা হলে আর অ্যাম্বুল্যান্স রেখে হবে কী? বস্তুত পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্সের কথা জানাই নেই তাঁদের অনেকের গত মঙ্গলবার বিধাননগর আদালতে দু’জন অসুস্থ হয়ে পড়লে যে ভাবে পুলিশের গাড়িতে করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকের আবার বক্তব্য, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অ্যাম্বুল্যান্স মজুত রেখেছে পুলিশই। ফলে এটা পরিষ্কার যে, পুলিশের সদিচ্ছা রয়েছে। কিন্তু কোথাও সমন্বয়ের অভাব হচ্ছে।
বিধাননগরের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে যে অভিযোগ, তার সবটা ঠিক নয়। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য থাকে। অনেক ক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স ঘটনাস্থলে পৌঁছতে যে সময় লাগে, তত ক্ষণ অপেক্ষা করা যায় না। তাই সে সব ক্ষেত্রে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার হয় না। তবে নিশ্চিত ভাবে এলাকার আয়তন, জনসংখ্যা ও গাড়ির চাপ বিবেচনা করে অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা রয়েছে প্রশাসনের।’’