প্রতীকী ছবি।
পুজোর মরসুমে অন্যান্য বেসরকারি অ্যাপ-ক্যাবের তুলনায় কম খরচে যাত্রীদের পরিষেবা দিতে সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে পথ চলা শুরু করল সরকারি অ্যাপ ‘যাত্রী সাথী’। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাট থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ওই অ্যাপের উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাসস্থান ছাড়াও হাজরা মোড়, হাওড়া স্টেশন এবং কলকাতা বিমানবন্দরে একযোগে ওই অ্যাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। এ দিন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাত্রী এবং চালকদের সুবিধার্থে প্রথম এমন সরকারি অ্যাপ চালু হচ্ছে। এখানে কমিশন এবং সার্জ না থাকার ফলে সকলেই লাভবান হবেন।’’
পরিবহণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সূত্রের খবর, নতুন অ্যাপে স্বচ্ছতার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলি অত্যধিক চাহিদার সময়ে ভাড়া নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে বরাবরই এক ধরনের ধোঁয়াশা রেখে চলে বলে অভিযোগ। নতুন অ্যাপে এ সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রেখে চলা হচ্ছে। পাশাপাশি, অ্যাপে যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অ্যাপের ড্যাশবোর্ড সরাসরি পুলিশের দেখার সুযোগ থাকায় যে কোনও ধরনের নিরাপত্তাজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে সরাসরি সাহায্য পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বেসরকারি ক্যাব সংস্থাগুলি চাহিদা কম থাকলে নানা ছুতোয় চালকদের আইডি ব্লক করে তাঁদের যাত্রী ভাড়া পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে বলেও অভিযোগ। নতুন অ্যাপে এই সমস্যা থাকবে না।
এ দিন ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি মেন্স ইউনিয়ন’-এর সভাপতি তথা রাজ্য পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান মদন মিত্র হাওড়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। নতুন অ্যাপ যাত্রীদের এবং চালকদের আর্থিক ভাবে লাভবান করবে বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই ‘যাত্রী সাথী’ অ্যাপ গুগল প্লে স্টোর ছাড়াও অ্যাপল স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। দু’রকম প্ল্যাটফর্মের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। কমবেশি দু’হাজার ট্যাক্সি এবং অ্যাপ ক্যাব ওই অ্যাপে সব সময়ে থাকছে। দৈনিক প্রায় সাত হাজার ট্রিপ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ করছে ওই অ্যাপ।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লক্ষা টাকা ভাড়ায় লেনদেন হচ্ছে অ্যাপের মাধ্যমে। নতুন অ্যাপ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কলকাতার বাছাই করা পাঁচ শতাধিক পুজো মণ্ডপে ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার, ফ্লেক্স এবং হোর্ডিং দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।
এ দিন নতুন অ্যাপ সম্পর্কে এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের সর্বভারতীয় নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘নতুন অ্যাপ চালকদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে বলে আশা। স্বচ্ছতার সঙ্গে সরকারি অ্যাপ চালানো হলে যাত্রী-মহলে দ্রুত এর জনপ্রিয়তা বাড়বে।’’
নতুন অ্যাপের রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি সরকার নিজেই দেখাশোনা করুক বলে দাবি জানিয়েছেন সিটুর অ্যাপ-ক্যাব সংগঠনের নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। নতুন অ্যাপে বাইক ট্যাক্সিকে যুক্ত করার দাবি তুলেছেন এআইইউটিইউসি-র বাইক-ট্যাক্সি সংগঠনের সম্পাদক দেবু সাউ।