প্রতীকী ছবি।
গত কয়েক দিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে একটি ভিডিয়ো। জাইবা আহমেদ নামে কলকাতার এক বাসিন্দা সেই ভিডিয়োর মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েছেন, সম্প্রতি তিনি মোবাইলে একটি মেসেজ পান। সেই মেসেজটি পার্ক স্ট্রিটের একটি নামী রেস্তোরাঁ থেকে পাঠানো হয় বলে দাবি ওই ব্যক্তির। মেসেজে ওই রেস্তোরাঁ থেকে খাবার হোম ডেলিভারির অফার দেওয়া হয় তাঁকে। মেসেজে একটি ফোন নম্বরও দেওয়া ছিল।
জাইবার অভিযোগ, তিনি সেই নম্বরে ফোন করার পর তাঁকে অনলাইন পেমেন্ট এবং খাবার বুকিংয়ের জন্য একটি লিঙ্ক পাঠানো হয়। সেখানে ক্লিক করতেই তাঁর অ্যাকাউন্ট ডিটেল দিতে হয়। সেগুলো দেওয়ার পরই ১০ টাকা বুকিং চার্জ হিসাবে কাটা হবে বলে একটি ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) আসে। সেই ওটিপি দেওয়া মাত্র তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১ হাজার টাকা কাটা যায়। এর পর আরও ওটিপি আসতে থাকে। তখনই তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এর পর তিনি কার্ড ব্লক করিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: শ্বশুরের কেনা অন্য ফ্ল্যাটে লুকনো ছিল পিস্তল, ফুলবাগানের ঘটনায় নয়া তথ্য
জাইবা একা নন। পুলিশের দাবি, এই অভিজ্ঞতা আরও অনেকের হয়েছে গত কয়েক মাসে। লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে নতুন প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে অনলাইন প্রতারকরা। মে মাসে ঠিক একই রকম পার্ক স্ট্রিটের একটি রেস্তরাঁয় খাবার বরাত দিতে গিয়ে ৩২ হাজার টাকা খুইয়েছিলেন জয়ন্ত মজুমদার নামে নেতাজিনগরের এক বাসিন্দা। ওই একই ফাঁদে পা দিয়ে কলকাতার আরও অনেকেই টাকা খুইয়েছেন। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই পার্ক স্ট্রিটের কয়েকটি নামী রেস্তরাঁর নাম করে প্রতারণা করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখা সব ক’টি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা এর পিছনেও রয়েছে জামতাড়া বা দেওঘর গ্যাং। গত এক মাসে দেওঘর থেকে প্রায় ৩০ জন এ রকম অনলাইন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তাদের জেরা করে পুলিশের ধারণা, রেস্তরাঁ থেকে হোম ডেলিভারির নামে প্রতারণাও ওই জামতাড়া গ্যাংয়ের কারসাজি। কারণ এ ক্ষেত্রেও মূলত পেটিএম প্রতারণার কৌশলই কাজে লাগানো হচ্ছে। মেসেজে লিঙ্কের মাধ্যমে একটি অ্যাপ পাঠানো হচ্ছে। লিঙ্কে ক্লিক করলেই সেই অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে যাচ্ছে মোবাইলে। তারপরেই দূর থেকে মোবাইলের নিয়ন্ত্রন চলে যাচ্ছে প্রতারকদের হাতে। কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার এ ধরনের অচেনা নম্বর থেকে আসা লিঙ্কে ক্লিক না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।