প্রতীকী চিত্র।
দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করে কলেজে ভর্তি এখন অনলাইনেই হয়। গত কয়েক বছর ধরে পড়ুয়ারা ভর্তির ফর্ম পূরণ থেকে জমা দেওয়া, সবই করেছেন বাড়িতে বসে। তবে পড়ুয়ারা যে দিন প্রথম কলেজে ক্লাস করতে যান, সেই দিন তাঁর নথি ফের পরীক্ষা হয়। সেই মতো একাদশেও ভর্তি কেন অনলাইনে হবে না? প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবক ও শিক্ষকদের একটি অংশ।
তাঁদের মতে, করোনা পরিস্থিতিতে একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনেই হওয়া দরকার। কিছু স্কুল নিজেদের উদ্যোগে একাদশে ভর্তি অনলাইনে চালু করেছে। তবে বেশির ভাগ স্কুলেই সেই ব্যবস্থা এখনও চালু হয়নি। রাজ্য সরকারের তিন ধরনের স্কুল রয়েছে। সরকারি স্কুল, সরকার পোষিত স্কুল এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল। অধিকাংশ স্কুলই সরকার পোষিত স্কুল। তাদেরই কয়েকটিতে অনলাইনে একাদশে ভর্তি শুরু হয়েছে।
সরকারি স্কুলগুলিতে অনলাইন ভর্তির দাবি তুলেছেন সরকারি শিক্ষকদের একাংশ। ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানান, হাতে গোনা সরকারি স্কুলগুলিতে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কী কী বিষয় রয়েছে, তা-ও জানা যায়। এমনকি, একাদশে ভর্তির ফর্ম একটাই। সেটি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করার সুযোগ আছে। অথচ সেই ডাউনলোড করা ফর্ম পূরণ করে স্কুলে গিয়ে জমা করতে হয়। অর্থাৎ, ভর্তি হয় অফলাইনে। সৌগতবাবু বলেন, “একাদশে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া চালু হলে ভর্তির ফর্ম পূরণ করে এক জন ছাত্র একাধিক সরকারি স্কুলে আবেদন করার সুযোগ পাবেন। করোনা আবহে স্কুলেও যেতে হবে না। পড়ুয়ারাও সুরক্ষিত থাকবে।”
যেমন, কয়েক জন অভিভাবক জানাচ্ছেন, তাঁদের ছেলেরা হিন্দু, হেয়ার, সংস্কৃত কলেজিয়েট তিনটি স্কুলেই ভর্তির জন্য আবেদন করবে। এ জন্য তাদের আলাদা আলাদা ভাবে স্কুলে গিয়ে ফর্ম জমা দিতে হবে। অথচ অনলাইনে আবেদন করা গেলে বাড়িতে বসেই তিন স্কুলে ভর্তির আবেদন করা যেত বলে দাবি তাঁদের।
সরকার পোষিত কয়েকটি স্কুল নিজেদের উদ্যোগে অনলাইনে ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। যেমন যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, “একাদশে ভর্তির জন্য স্কুলে আসার দরকার নেই। অনলাইন ভর্তির পরীক্ষা থেকে ভর্তির ফর্ম পূরণ ও জমা দেওয়া, মেধাতালিকা অনুযায়ী ভর্তি সব অনলাইনেই হবে। যেহেতু এখন স্কুলে ক্লাস হচ্ছে না, তাই একাদশের ক্লাসও সেকশন ভাগ করে অনলাইনে শুরু হবে।” পরিমলবাবু জানান, তাঁদের স্কুলের নামে রয়েছে অ্যাপ। ওই অ্যাপ ডাউনলোড করে অনলাইনে ভর্তির সমস্ত প্রক্রিয়া জানা সম্ভব।
একাদশে অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করা যেতেই পারে বলে মনে করছেন সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সঞ্চয়িতা চৌধুরী রায়। তিনি বলেন, “আমাদের একাদশে অফলাইনেই ভর্তি নেওয়া হয়। তবে করোনাকালে ভর্তির জন্য অনলাইন ও অফলাইন, দু’ধরনের সুযোগ রাখা যেতেই পারে।অনলাইনে
ভর্তির সুযোগ থাকলে অনেকেই সেই সুবিধা নেবেন।”
যদিও ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারের মতে, “কলকাতা বা সংলগ্ন শহরতলির স্কুলগুলিতে হয়তো অনলাইনে একাদশে ভর্তি সম্ভব। গ্রামাঞ্চলে যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল, সেখানে অনলাইনে ভর্তিতে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে।”