এমন অভিজ্ঞতা এ বারই প্রথম!
শহরের রাজপথে যানশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বদলে তাদের কাঁধে এ বার ‘পাড়াগাঁয়ের ভোট’-এর দায়িত্ব।
পঞ্চায়েত এলাকাভুক্ত হয়েও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা কলকাতা পুলিশের অধীনে আসায় সেখানকার পঞ্চায়েত ভোটের দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে লালবাজারের উপরে। ফলে শহুরে পুলিশ এ বার গ্রামীণ এলাকার ভোট করাবে। প্রায় চল্লিশ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল নিয়ে গঠিত লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার পুরোটাই পঞ্চায়েতের অধীন।
১৬২ বছরের ইতিহাসে প্রথম বার পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করতে চলেছে লালবাজার। সোমবারের ওই ত্রিস্তরীয় ভোটের জন্য ইতিমধ্যেই সব প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছে লালবাজারের। ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশদের হাত ধরে কলকাতা পুলিশ গঠন হওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় পুরসভা, বিধানসভা, লোকসভা কিংবা সাধারণ ক্লাবের ভোট লালবাজারের তত্ত্বাবধানে হলেও কলকাতা পুলিশ এলাকায় এত দিন পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। ফলে শহুরে ভোট নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন সাদা পোশাকের উর্দিধারীরা। তবে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা জেলায় গিয়ে আগেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বা ভোট পাহারার দায়িত্ব সামলেছেন। কিন্তু নিজেদের এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটের অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁদের।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুরোটাই পঞ্চায়েতের অধীন। যা বছরখানেক আগে কলকাতা পুলিশের অধীনে আসে। চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে ওই এলাকায়। ভাঙড় ও ক্যানিং (পূর্ব), দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে বামনঘাটা, বেওতা ১ এবং ২, তারদা— এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত ওই থানার অধীন। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বেশির ভাগ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দল জিতে গেলেও জেলা পরিষদের দু’টি আসনের জন্য ৩৯টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ৬৫টি বুথেই এ বার ভোট হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশ মূলত শহরকেন্দ্রিক। তাদের পরিকাঠামো অনেক উন্নত। কিন্তু কলকাতা পুলিশ এলাকা হলেও লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার পরিকাঠামো সেই অর্থে ‘উন্নত’ নয়। শহরের ভোটে অশান্তি বা অনিয়মের খবর পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই যে কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছে যেতে পারতেন কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। কিন্তু কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় দ্রুততার সঙ্গে পুলিশকে পৌঁছতে বেগ পেতে হতে পারে। ওই থানা এলাকায় কয়েকটি বুথের মধ্যে দূরত্ব বেশ কয়েক কিলোমিটার।
লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করানোর জন্য প্রস্তুত। এক জন ডিসির নেতৃত্বে সাতটি সেক্টর ভাগ করে প্রায় সাড়ে তিনশো পুলিশকর্মীকে নামানো হচ্ছে ওই দিন ভোট পরিচালনা করার জন্য। সেই সঙ্গে প্রতিটি বুথে থাকছে এক জন অস্ত্রধারী পুলিশের সঙ্গে লাঠিধারী পুলিশ। এর বাইরে একটি কুইক রেসপন্স টিম, তিনটি আরটি মোবাইল ভ্যান, সাতটি সেক্টর মোবাইল ভ্যান।