বৃহস্পতিবার কলকাতার রাস্তায় পুলিশের টহলদারি। —নিজস্ব চিত্র।
লকডাউন ভেঙে অনেকেই কোনও কারণ ছাড়াই গাড়ি-বাইক নিয়ে রাস্তায় বেরোচ্ছেন। এ বার তাদের আটকাতে কড়া পদক্ষেপ করল কলকাতা পুলিশ। লকডাউন ভেঙে অযথা গাড়ি-বাইক নিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই সে সব বাজেয়াপ্ত করা শুরু করল তারা।
ওই অভিযানে, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত শহরে ৭৭টি বাইক, স্কুটার এবং গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে কলকাতা পুলিশ সূত্রে। ওই গাড়িচালক এবং সওয়ারিদের বিরুদ্ধেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারায় মামলা করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা টুইট করে এই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। নগরপাল ওই বার্তায় মানুষকে সতর্ক করেছেন। তিনি সকলের কাছে বাড়ি থেকে না বেরনোর অনুরোধ করেছেন।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, গত তিন দিন ধরে হঠাৎ করেই শহরের রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যায়। ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘গত সোমবার শহরের কয়েকটি রাস্তা দেখে মনে হচ্ছিল লকডাউন নয়, গ্রীষ্মের দুপুরে রবিবারের রাস্তা।’’ লালবাজার সূত্রে খবর, লকডাউন ঘোষণার প্রাথমিক পর্যায়ের কড়াকড়ি একটু কমতেই এক শ্রেণির মানুষ নানা অছিলায় বাইরে বেরোতে শুরু করেন। বিষয়টি নজরে আসে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
আরও পড়ুন: স্কুলে কোয়রান্টিন সেন্টার, শুনেই আতঙ্কে পথ অবরোধে নিউটাউনের বাসিন্দারা
আরও পড়ুন: প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকলেই পাশ, ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর
বুধবার নবান্নে করোনা নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী লকডাউন ভেঙে মানুষের বাইরে আসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার পরেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার মতো কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার প্রথম দিন, ২৩ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল নিয়ম ভাঙার জন্য। পরের দিকে সেই কড়াকড়ি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ২৫ মার্চ গ্রেফতার হন ৮৭৩ জন। পরের দিন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৪৫৩-য়। ৩১ মার্চ সেই গ্রেফতারির সংখ্যা কমে ৩৫-এ দাঁড়ায়। পুলিশ কর্তাদের একাংশের দাবি, কড়াকড়িতে মানুষ অভ্যস্ত হয়েছেন তাই গ্রেফতারির সংখ্যা কমেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে যে নজরদারিতেও ঢিলেমি এসেছে তা এ দিন পুলিশ কমিশনারের টুইটে প্রমাণিত। তিনি লিখেছেন, ‘‘অনুমতি এবং বিশেষ কারণ ছাড়া যাঁরা বাড়ির বাইরে আসবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছি অফিসারদের।”