প্রতীকী ছবি।
অভিযোগ-অনুযোগ লেগেই থাকে। তার সঙ্গেই থাকে প্রতিবাদ, হুঁশিয়ারি। কিন্তু এগুলো এখন আর তেমন জোরালো নয়। বরং করোনা পরিস্থিতি ‘মেনে ও মানিয়ে নিয়ে’ই দিন গুজরান করছেন লৌহকপাটের বাসিন্দারা। তবে শুকনো খাবারের জন্য অনুরোধ করেছেন ‘হাইপ্রোফাইল’ বন্দি আফতাব আনসারি-সহ অনেক বন্দি।
একদা আলিপুর জেলে থাকলেও মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে জঙ্গি হামলার মামলার আসামি আফতাব এখন আছেন প্রেসিডেন্সি জেলে। কয়েক দিন আগে বাদাম, বিস্কুট ও খেজুর এনে দেওয়ার জন্য জেল-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান তিনি। তাঁর আর্জি জেল-কর্তৃপক্ষের বিবেচনাধীন।
বিভিন্ন বন্দির সঙ্গে তাঁদের বাড়ির লোকজন দেখা করতে আসেন, মুড়ি, চানাচুর, বিস্কুট, চিঁড়ের মতো শুকনো খাবার ও ফল দিয়ে যান। জেলের নিয়মকানুন অনুযায়ী এসব দেওয়া যায়। কিন্তু যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আফতাবের সঙ্গে তাঁর বাড়ির লোক দেখা করতে আসেন না। তাই তাঁর টাকায় কয়েকটি শুকনো খাবার এনে দেওয়ার জন্য জেল-কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন আফতাব। রাজ্যের অন্যতম ‘হাইপ্রোফাইল’ বন্দি আফতাবের সেলের নজরদারিতে রয়েছে একাধিক সিসি ক্যামেরা। তার মাধ্যমে নজর রাখেন কারা প্রশাসন এবং লালবাজারের অফিসারেরা।
জেল সূত্রের খবর, সাধারণত সকালের দিকেই বন্দিদের মুড়ি, বিস্কুট, চিঁড়ের মতো শুকনো খাবার দেওয়া হয়। অনেক বন্দিই নিজেদের ইচ্ছেমতো খাবেন বলে খাবার কিনে রাখেন। জেল ক্যান্টিনে শুকনো খাবার পাওয়া যায়। তা হলে আফতাব বাইরে থেকে খাবার এনে দেওয়ার আবেদন করছেন কেন? কারণ, গত ২১ মার্চ, দমদম জেলে তাণ্ডবের দিনে প্রেসিডেন্সি জেলের ক্যান্টিনেও ভাঙচুর করার অভিযোগ রয়েছে বন্দিদের বিরুদ্ধে। মেরামত করার আগেই লকডাউন শুরু হয়ে যায়। তাই সেই ক্যান্টিন এখন বন্ধ। সেই জন্য প্রেসিডেন্সি জেলে শুকনো খাবার পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।
একই চিত্র রাজ্যের অন্যান্য জেলেও। লকডাউনের জন্য শুধু শুকনো খাবার নয়, রান্না খাবার নিয়ে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে অশান্তি বা ঝগড়াঝাঁটি হচ্ছে না। বন্দিরা শান্ত ভাবেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন বলে জেল সূত্রের খবর। কারাকর্তাদের অনেকে বলেন, ‘‘করোনা নিয়ে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলছেন বন্দিরা। টিভি, খবরের কাগজেও দেখছেন। নিজেরা বুঝছেন। তাই হয়তো এই পরিবর্তন।’’ যদিও অনেক সমালোচক বলছেন, ‘‘দমদম জেলের গোলমালে কী কী ঘটেছে, তা বন্দিরা জানেন। তাঁরা ভয় পেয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন।’’ এই বক্তব্য উড়িয়ে দিচ্ছেন কারা প্রশাসনের কর্তারা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)