— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মাসকয়েক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া, অনূর্ধ্ব ১৮ ছেলেটির মৃত্যুর পরে তাকে যৌন লাঞ্ছনার অভিযোগ ওঠে। তার পরেও নানা প্রশ্ন উঠেছিল। রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘‘আইনজ্ঞদেরও বেশ কষ্ট করে বোঝাতে হয়েছিল, ছেলেটি পুরুষ হলেও সে নির্যাতিত হতে পারে। তার কোমল স্বভাব নিয়ে ব্যঙ্গ করে মেয়েলি বলে টিটকিরি চরমে ওঠা থেকেও অনেক কিছু ঘটতে পারে।’’ ইউনিসেফের শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ পারমিতা নিয়োগীও সাম্প্রতিক এক ঘটনা প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘অনেক সময়ে আইনরক্ষকদের মধ্যেও ছোট ছেলেদের পীড়ন নিয়ে ধোঁয়াশা থাকে। বিষয়টা হাসপাতাল অবধি না-গড়ালে কেউ গুরুত্বই দিতে চান না।’’ ছোট মেয়েদের মতো ছোট ছেলেরাও যে যৌন হেনস্থার শিকার হতেই পারে, এ বিষয়ে অজ্ঞতার দেওয়াল ভাঙতে এ বার উদ্যোগী হল রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন।
মঙ্গলবার, ছোট ছেলেদের যৌন নির্যাতন রোধে আওয়াজ তোলার দিন, ব্লু আমব্রেলা (নীল ছাতা) দিবস পালনে শামিল হয়েছিল তারা। রাজ্যের বিভিন্ন কমিশনারেটের পুলিশকর্মী, স্কুল ইনস্পেক্টর, সমাজকর্মীদের সামনে তাঁরা বিষয়টি তুলে ধরেন। দীর্ঘদিন এই নিয়ে কাজ করছেন দীপ পুরকায়স্থ। তিনি বলেন, ‘‘বলা হয়, সারা বিশ্বে ১৩টি ছোট ছেলের মধ্যে এক জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু আদতে সংখ্যাটা আরও বেশিই হবে।’’ কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস যৌন নির্যাতন নিয়ে ছোট ছেলেদের মতো বিশেষ ভাবে সক্ষমদের অনুচ্চারিত যন্ত্রণার কথাও বলেন। সমকামী, রূপান্তরকামী শিশুদের কথাও উঠে আসে। কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় বলেন, ‘‘ছোট ছেলেদের নামে ওঠা অনেক অভিযোগের তদন্তেই দেখা যায়, আসলে ছেলেটি পরিবারের বয়স্কা আত্মীয়াদের দ্বারাই যৌন নির্যাতনের শিকার। কিন্তু ছেলেদেরও ধর্ষণ হতে পারে, এটা বোঝেন ক’জন!’’ শিশু অধিকার ও পাচার রোধ সংক্রান্ত অধিকর্তা নীলাঞ্জনা দাশগুপ্তও বলেন, ‘‘ছোট ছেলেদের সমস্যাগুলি বুঝলে অল্পবয়সীদের বিয়ের সমস্যাও অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যেত।’’