গত ২৯ এপ্রিলের ভোররাত অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে সবচেয়ে কঠিন স্মৃতি। ভুলতে চাইলেও বার বার তাড়া করবে সেই মুহূর্তটা। রাতভর পার্টির পর স্টিয়ারিংয়ে বসেছিলেন তিনি। পাশে বন্ধু সোনিকা। তারপর...
সোনিকার মৃত্যুর খবর পান হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। গতকাল, বৃহস্পতিবার ছাড়া পান হাসপাতাল থেকে। সেই ঘটনার সপ্তাহখানেক পর শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিক্রম বললেন, ‘‘কষ্টটা আমার কোথায় হচ্ছে, বোঝাতে পারব না। এই ক্ষতির কোনও ক্ষতিপূরণ হয় না। তবুও আমি চেষ্টা করব।’’ চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি অভিনেতা।
আরও পড়ুন, বিক্রম আপাতত নেই, ‘ইচ্ছে নদী’তেও দেখানো হবে দুর্ঘটনা
এ দিনই আলিপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন অভিনেতা। গাড়ি দুর্ঘটনা মামলায় আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনও পেয়েছেন তিনি। আপাতত ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত জামিনে মুক্ত বিক্রম। মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা চেহারাটা দৃশ্যতই বিধ্বস্ত। কিন্তু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় কিছুটা ডিপ্লোম্যাটিক হতে দেখা গেল তাঁকে। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর কাছে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি নেশা করে গাড়ি চালাচ্ছিলেন? বিক্রমের সাফ জবাব, ‘‘একেবারেই নয়।’’ যদিও দুর্ঘটনার পর একটা মহল থেকে এমন অভিযোগ উঠেছিল।
পরের প্রশ্ন ছিল, আপনার বিরুদ্ধে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোরও অভিযোগ উঠেছে, কী বলবেন? উত্তরে অভিনেতা বলেন, ‘‘এই অভিযোগও সত্যি নয়।’’ স্বাভাবিক ভাবেই জানতে চাওয়া হয়, তা হলে দুর্ঘটনাটি ঘটল কী ভাবে? উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমার আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী এ সব প্রশ্নের উত্তর আগে পুলিশকে জানাব, তারপর আপনাদের বলব। পুলিশ পুলিশের মতো তদন্ত করছে। আমি এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আজ আদালতে গিয়েছিলাম। খুব তাড়াতাড়ি থানায় গিয়ে স্টেটমেন্ট দিয়ে আসব।’’
আরও পড়ুন, এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেন বিক্রম
দুর্ঘটনার পর গাড়ি থেকে নিজেই বেরিয়ে সে দিন বাবাকে ফোন করেছিলেন বিক্রম। সোনিকার বাড়িতে খবর দেওয়ার কথা মাথাতেই আসেনি বলে দাবি তাঁর। এখনও পর্যন্ত সোনিকার বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেননি। তবে খুব তাড়াতাড়িই তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ দিন হাতজোড় করে বিক্রম বলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি কাজে ফিরতে চাইছি। আপনারা সবাই সাহায্য করুন। সোনিকার পরিণতি আমার হলে এতটা দুঃখ হত না।’’