ধুলো-ধোঁয়ায় ভরে আছে রাস্তাঘাট। তারই মধ্যে দাঁড়িয়ে রাস্তার ধারের অস্থায়ী দোকান থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন অসংখ্য তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। দোকানগুলির ভিতরেও বেশ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টর জু়ড়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই রয়ে গিয়েছে ওই সব অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি খাবারের দোকান, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য-সুরক্ষার নিরিখে যা বেমানান। অবশেষে এই ছবিটার পরিবর্তন হতে শুরু হয়েছে। রাস্তার ধারের অস্থায়ী দোকানগুলিকে নিয়ে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে ‘নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি’। ফুডকোর্ট থেকে শুরু করে মডেল দোকান-সহ রকমারি চিন্তাভাবনা রয়েছে সেই পরিকল্পনায়। তা কার্যকরী করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু সেই কাজ পুরোপুরি বাস্তবায়িত হওয়ার আগে আপাতত দোকানগুলির সাজ পরিবর্তন শুরু হয়েছে। সেখানে যাতে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে খাবার বিক্রি করা হয়, তা নিয়ে পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে। কার্যত, দোকানগুলির মধ্যে সৌন্দর্যায়ন ও সচেতনতার ভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে নবদিগন্ত। ইতিমধ্যেই ওই কাজ নজর কেড়েছে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদেরও। তাঁরা বলছেন, গোটা শিল্পতালুকে এমন ভাবে কাজ হলে তা সারা দেশের দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
জন্মলগ্ন থেকেই পাঁচ নম্বর সেক্টর জুড়ে গজিয়ে উঠেছে রকমারি খাবারের দোকান। অফিসের কাছেই কম সময়ে সুলভ মূল্যে পাওয়া খাবার দ্রুত জনপ্রিয়তাও লাভ করেছে। কিন্তু ওই এলাকায় গাড়ি ও মানুষের চাপের তুলনায় রাস্তার পরিমাণ অনেকটা কম। ফলে ফুটপাথ দখল করেই চলে বেশির ভাগ খাবারের দোকান। এর সুরাহা করতে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রশাসনের তরফে নানা পরিকল্পনার কথা বলা হলেও এত দিনে তা কাজে পরিণত হতে চলেছে।
নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই বিষয়ে কাজ করছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক অন্যতম কর্মকর্তা সমরেশ মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁরা প্রতিটি দোকানদারের সঙ্গে কথা বলছেন। তাঁদের সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। দোকানের জায়গার সামান্য হেরফের করে, দোকানের সাজের পরিবর্তন করে সৌন্দর্যায়নের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি দোকানে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ তৈরি করে রান্না করা এবং খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রেও কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। যেমন, দোকানের বাঁশগুলিকে নানা রঙে সাজানো হচ্ছে। ত্রিপলের বদলে ৬ ইঞ্চির ফেস্টুন ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে প্রশাসনের তরফে নানা সচেতনতার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে কী কী করণীয়, তা-ও লেখা হচ্ছে।
নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দেবাশিস সেনও বলেন, ‘‘রাস্তার ধারের দোকানগুলিকে নিয়ে বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলি প্রয়োগ করা হবে। সঙ্গে থাকবে সচেতনতার বার্তাও।’’
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা বলছেন, এই শিল্পতালুকের কাজের যা চাপ, তাতে খাওয়ার জন্য বেশি সময় দেওয়া সম্ভব নয়। আবার খাবারের দামও নাগালের মধ্যে থাকা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে রাস্তার ধারের দোকানগুলিই শ্রেয়। কিন্তু সেগুলির অবস্থা স্বাস্থ্যকর নয়। তাই সেগুলিকে নতুন করে সাজানোয় সুবিধাই হবে।