বিধাননগরে রাস্তা সারাইয়ের জন্য বিপুল অঙ্কের প্রকল্প রিপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে নগরোন্নয়ন দফতর। ফাইল ছবি।
এ যেন তালগাছে হাঁড়ি চাপিয়ে ভাত রান্নার চেষ্টা।
বিধাননগরে রাস্তা সারাইয়ের জন্য বিপুল অঙ্কের প্রকল্প রিপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে নগরোন্নয়ন দফতর। যে টাকার কাজ হয়েছিল, তা এখনও হাতে পায়নি বিধাননগর পুরসভা। তার মধ্যে সরকারি স্তর থেকে নির্দেশ এসেছে পরবর্তী ক্ষেত্রে অল্প অল্প টাকার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে সরকারের কাছে পাঠাতে হবে। অর্থ দফতর অনুমোদন দিলে সেই টাকায় রাস্তা তৈরি করতে হবে। যার জেরে সল্টলেক তথা বিধাননগর পুর এলাকায় বেহাল দশায় পড়ে থাকা রাস্তার হাল কত দিনে ফিরবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে যা জানিয়েছেন, তাতে আপাতত ছোট ছোট অঙ্কের প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করেই পুরসভাকে রাস্তার কাজ করতে হবে। রাস্তা সারাইয়ের জন্য ১২৫ কোটি টাকার প্রকল্প রিপোর্ট পুরসভার তরফে পাঠানো হয়েছিল নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে। বৃহস্পতিবারকৃষ্ণা বলেন, ‘‘একসঙ্গে ১২৫ কোটি টাকার প্রকল্প রিপোর্ট অর্থ দফতর অনুমোদন করবে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের তরফেই ভুল হয়েছিল। আমরা রাস্তা সারাইয়ের জন্যপুরমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েছি। অল্প অল্প করে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে কাজ করব। কোনও প্যাচওয়ার্ক না করে রাস্তা সারাই হবে।’’
কার্যত একই কথা জানিয়েছেন রাস্তা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত, বিধাননগরের ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তা সারানো হবে। কিছু সমস্যা হয়েছিল। আমরা পুরমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েছি। সেই ভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই ১২৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে ধরে নিয়ে ৩০ কোটি টাকার রাস্তার কাজ করাও হয়েছিল। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ওই কাজ হয়। কিন্তু সেই টাকাও পুরসভা পায়নি। ফলে ঠিকাদারও সেই কাজের টাকা এখনও পাননি।
আধিকারিকদের একটি অংশ জানিয়েছেন, সেই সময়ে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন থাকায় রাস্তার ৩০ কোটি টাকার ওই কাজ করানো জরুরি ছিল। সামগ্রিক রাস্তার কাজ করতে ১২৫ কোটি টাকার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল। এর পরে বাকি ৯৫ কোটি টাকা পড়ে থাকলেও ওই টাকা এক বারে পাওয়া যাবে না। অল্প অল্প করে রাস্তার কাজের পরিকল্পনা করে প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করতে হবে।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, এখানেই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ দু’ বছর ধরে রাস্তা ধীরে ধীরে ভেঙেছে এবং এখনও ভাঙছে। এর পরে বর্ষা আসবে। তাতে রাস্তার আরও ক্ষতি হবে। এই অবস্থায় রাস্তা তৈরির খরচ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুরনো প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির সময়ে কোন রাস্তা কী অবস্থায় ছিল এবং নতুন প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির সময়ে কী অবস্থায় রয়েছে, সে সবও খতিয়ে দেখতে হবে পুরসভাকে। ফলে কত দিনে বিধাননগর পুর এলাকার রাস্তার হাল ফিরবে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি কোনও মহলই।