পুজোর নিজস্বী। শুরা যুবকবৃন্দের ঠাকুর দেখার ফাঁকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
আক্ষরিক অর্থেই তরুণ দল কিংবা নতুন সঙ্ঘ বলা চলে।
প্রতি বছর উৎসব কাপেই পাওনা থাকে। নতুন নতুন শিল্পীরা নামীদের পাশে তাঁদের কাজও লোকজনের নজর কাড়ে। এ বছর কিন্তু সেই সব হিসেব নিকেশ বদলে গিয়েছে। উৎসব কাপ এ বার জমে উঠেছে নতুন শিল্পীদের হাতেই।
গত কয়েক বছর ধরেই পুজো ময়দানে অনির্বাণ, প্রদীপ, শিবশঙ্কর, বিশ্বনাথ নামগুলি শোনা যাচ্ছিল। এ বার পুজো ময়দানে তারকা ওঁরাই। ওঁদের পাশাপাশি রিন্টু, রূপক, সুজিত, পিয়ালী, রাখী, সুমিরা নজর কেড়েছে। নতুনদের এই উঠে আসাকে স্বাগত জানাচ্ছেন ময়দানের অভিজ্ঞ শিল্পীরা।
আর্ট কলেজের স্নাতক স্তরের ছাত্র প্রদীপ দাস বছর দুয়েক আগে বেহালার একটি ক্লাবে তাক লাগিয়ে ছিলেন। এ বার কাশী বোস লেনে তাঁর ‘শিক্ষা ও পরিবেশ’ আমজনতা থেকে শিক্ষা বোদ্ধা সকলের তারিফ কুড়িয়েছেন। বেহালা এলাকার নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাবেও প্রদীপের কাজ নজর কেড়েছে।
নতুন শিল্পীদের মধ্যে গত কয়েক বছর ধরে সুনাম কুড়িয়েছেন অনির্বাণ দাস। বছর দুয়েক আগে কাঁকুড়গাছির যুবকবৃন্দে ভিড় উপচে পড়েছিল। এ বারও হিন্দুস্থান পার্ক বা তরুণ দলে অনির্বাণ তারিফ কুড়িয়েছেন। নজর কেড়েছেন আরও কয়েকটি পুজোতে।
চক্রবেড়িয়ায় শিবশঙ্কর দাসের ক্রিস্টালের বৃষ্টি বা শিউলি ফুল এখনও মনে রেখেছেন পুজো পাগলেরা। এ বার বেলেঘাটা ৩৩ পল্লিতে ট্যাক্সিকে নতুন ভাবে তিনি তুলে ধরেছেন।
অভিনব থিমে চমকে দিয়েছেন রিন্টু দাস। সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ সাধনে তাঁর ‘পুজো পাগলের থিম’ সুপারহিট। লোকশিল্প, বিমূর্ত আর্ট বাইরে এ এক নতুন ঘরানার জন্ম দিয়েছেন তিনি। ২৫ পল্লিতেও তাঁর কাজ নজর কেড়েছে।
একেবারেই আনকোড়া শিল্পীর হাতে ভার ছেড়ে ছিল দর্পনারায়ণ ঠাকুর স্ট্রিট ও ভবানীপুর অগ্রদূত উদয় সঙ্ঘ। গোয়ালঘর দর্পনারায়ণে লোক ঢুকছেন। নামী শিল্পীর দলের স্তম্ভের বিমান মাইতি ও মধুময় মাইতি এ বার জুটি বেঁধে কাজ করছেন শ্যামপুকুর আদি সর্বজনীনে।
তেমনই আর এক জন নামী শিল্পীর ডান হাত সুজিত লাল। এ বার সিকদার বাগানে স্বাধীন ভাবে কাজ করেছেন। ভবানীপুরের রূপচাঁদ মুখার্জি লেনের ইন্ডিয়ানদের শিল্প সংস্কৃতি তুলে এনেছেন শিল্পী রূপক বসু।
টক্কর দিচ্ছেন নারীরাও। কালীঘাট মিলন সঙ্ঘের শিল্পী পিয়ালী সাধুখাঁর প্রতিমা দেখে অনেকেই উচ্ছ্বসিত। গত শতকের শেষের দিকে তাক লাগিয়ে ছিল ভাঁড়ের মণ্ডপ। এ বার শিল্পী রাখী মুখোপাধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বেলেঘাটার নবমিলনে ভাঁড়কে ফিরিয়ে এনেছেন। গোলপার্কে শিল্পী সুদীপ্তা পালের কাজও নজরকাড়া। বেহালার শিল্পী সূচনার কাজেরও তারিফ মিলছে।
বেশ কয়েক বছর ধরেই পুজো ময়দানে রয়েছেন শিল্পী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। এ বছর পাতিপুকুর বসাক বাগানের তাঁর কাজ দেখে তারিফ করছেন শিল্পের সমঝদারেরা।