যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
র্যাগিং রুখতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির গাইডলাইন মেনে চলেনি। মেন হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পরে ইউজিসির প্রতিনিধিদল ক্যাম্পাসে এসে এমনটাই বুঝেছে।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ায় কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার এমনই জানিয়েছেন। এ দিনই যাদবপুরে নতুন করে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়াও র্যাগিং করলে তার শাস্তি কী হতে পারে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা আর একবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডকে আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিন বাঁকুড়ায় মন্ত্রী জানান, ইউজিসির প্রতিনিধি দল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করার পরে ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। প্রথমত, ছাত্রেরা র্যাগিং বিরোধী হেল্পলাইন নম্বর জানতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং বিরোধী স্কোয়াড যে সক্রিয় নেই, সেটা জানতেন না এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলের সদস্যেরা! এমনকি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষকেরা ইউজিসির র্যাগিং বিরোধী নিয়মকানুন কখনও পড়েই দেখেননি। হস্টেলের ওয়ার্ডেনরা চুক্তিভিত্তিক কর্মী— এটা নিয়মবিরুদ্ধ। সুভাষ জানিয়েছেন, ডিন অব স্টুডেন্টস একজন প্রশাসনিক আধিকারিক, তিনি শিক্ষক নন। সুভাষের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককেই ওই পদে নিযুক্ত করতে হয়। তিনি জানান, শিক্ষা মন্ত্রক পুরো বিষয়টি নিয়ে যাদবপুরকে চিঠি দেবে।
ডিন অব স্টুডেন্টসকে শিক্ষকই হতে হবে, রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এমন কোনও নিয়ম নেই বলে উচ্চ শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের দাবি। এই রাজ্যে একক বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ যাদের অধীনে কলেজ নেই, সেখানে ওই পদ রয়েছে। যেমন
যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি। যদি কোনও কারণে ওই পদ ফাঁকা থাকে, তখন কোনও শিক্ষক হয়তো দায়িত্ব সামলাতে পারেন।
এ দিন যাদবপুরে নব গঠিত অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সদস্য সংখ্যা করা হয়েছে ৩৩। কমিটির চেয়ারম্যান অন্তর্বর্তী উপাচার্য। নতুন অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, র্যাগিং একটি ফৌজদারি অপরাধ। কোনও প্রথম বর্ষের ছাত্র যদি ভর্তির সময়ে বা ইন্টারভিউ দেওয়ার সময়ে, হস্টেলে, ক্লাসে বা করিডরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে বা বাইরে র্যাগিংয়ের শিকার হন, তা হলে যে সব পড়ুয়া এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, শাস্তি হিসেবে তাঁদের সেই বছর নষ্ট হতে পারে। তাঁদের এক বছর কোনও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। তাঁদের হস্টেল থেকেও বহিষ্কার করা হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আজীবনের মতো বহিষ্কার করা হতে পারে। এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগ হলে, এই শাস্তির পাশাপাশি আইন অনুযায়ী আলাদা শাস্তি হবে। রাতে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি সারপ্রাইজ় ভিজ়িটের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে হস্টেল সংক্রান্ত বিষয়টি দেখার জন্য বিধি অনুযায়ী স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার বোর্ড থাকা সত্ত্বেও ১০ জন শিক্ষক মিলে বৈঠক করে তিন সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছেন বলে অভিযোগ। যার প্রতিবাদ জানিয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষক সমিতি জুটা।