pet dogs

Faithful Dogs: মালিক জেলে, দু’বছর খাঁচায় বন্দি থেকে অবসাদে দুই পোষ্য

বাড়ির সদস্যদের গ্রেফতার করার পরে পোষ্য দু’টিকে রাখার জন্য ট্যাংরা থানা পুরসভার ডগ স্কোয়াডে আবেদন জানায়।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৪২
Share:

শোচনীয়: এমনই অবস্থা রকি (বাঁ দিকে) ও টাইসন (ডান দিকে)। শুক্রবার, লালবাজারের কাছে সিএসপিসিএ-তে। নিজস্ব চিত্র

টানা দু’বছর খাঁচাবন্দি থাকায় মানসিক অবসাদে আক্রান্ত ওরা। পাশাপাশি দু’টি আলাদা খাঁচায় বেশির ভাগ সময়েই মনমরা হয়ে বসে থাকে। খাবার দিলে খেতে চায় না। ডোবারম্যান ‘রকি’ মাঝে মাঝে রেগে গিয়ে চিৎকার করে খাবারের থালাটা জোরে কামড়ে ধরে খাঁচার মধ্যেই ঘুরপাক খায়। পাশের খাঁচায় থাকা রটওয়াইলার ‘টাইসন’ও যে এতটা চুপচাপ হয়ে যাবে, তা কখনও ভাবেননি কেউ।

Advertisement

২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর ট্যাংরার মথুরবাবু লেনের বাসিন্দা জয়দেব দাসের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মাদক পাচারের। বাড়ির সিসি ক্যামেরায় পুলিশকে দেখতে পেয়েই জয়দেব ও তার স্ত্রী গৌরী বাড়ির দুই পোষ্য রকি ও টাইসনকে ছেড়ে দেয়। পুলিশ দরজা ভেঙে জয়দেবের বাড়িতে ঢুকতেই রকি ডগ স্কোয়াডের এক কনস্টেবলের দু’হাতে কামড়ে দেয়। টাইসনকে কোনও রকমে চেন দিয়ে বেঁধে পাশের ঘরে রাখা হয়। মাদক পাচারের পাশাপাশি পুলিশকে কাজে বাধা দেওয়া ও তাদের উপরে কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে জয়দেব, তার স্ত্রী ও মাকে গ্রেফতার করা হয়। তারা সকলেই এখন জেল হেফাজতে।

বাড়ির সদস্যদের গ্রেফতার করার পরে পোষ্য দু’টিকে রাখার জন্য ট্যাংরা থানা পুরসভার ডগ স্কোয়াডে আবেদন জানায়। পুরসভা জানিয়ে দেয়, ওই জাতীয় কুকুরদের স্থায়ী ভাবে রাখার পরিকাঠামো তাদের নেই। কুকুর দু’টির ভরণপোষণের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শিয়ালদহ আদালতের নির্দেশে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের অধীনস্থ ‘দ্য ক্যালকাটা সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমালস’ (সিএসপিসিএ)-এর তত্ত্বাবধানে গত দু’বছর ধরে খাঁচাবন্দি হয়ে রয়েছে রকি ও টাইসন। ‘সিএসপিসিএ’-র সচিব ও অধীক্ষক সমীর শীল বললেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে শিয়ালদহ আদালতের তদানীন্তন বিচারক এখানে ওদের রাখতে নিজে এসেছিলেন। আদালতের নির্দেশ মেনেই আমরা কুকুর দু’টিকে প্রতিপালন করছি।’’

Advertisement

তবে ‘সিএসপিসিএ’ বা পশু ক্লেশ নিবারণ সমিতি যে পন্থায় টানা দু’বছর ধরে পোষ্য দু’টিকে খাঁচাবন্দি করে রেখেছে, তা ওই সংস্থার কাজের পরিপন্থী বলেই মনে করেন পশু চিকিৎসক সমীর শীল। সমীরবাবুর কথায়, ‘‘প্রাণীদের দিনের পর দিন খাঁচায় রাখার বিরুদ্ধে আমরা। অথচ, আদালতের নির্দেশেই ওদের খাঁচাবন্দি করে রেখেছি। দেখে কষ্ট হয়।’’

সমীরবাবু বলেন, ‘‘ওদের ভরণপোষণের জন্য ট্যাংরা থানা প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়। দেখাশোনার জন্য ২৪ ঘণ্টার কর্মী রাখা হয়েছে। প্রথম প্রথম ওরা
পুরুষ কর্মী দেখলেই রেগে যেত। হয়তো জয়দেবের স্ত্রী বা মায়ের পরিচর্যায় থাকতে অভ্যস্ত ছিল ওরা। পরে এক মহিলা কর্মীকে রাখি।’’ তিনি জানান, কুকুর দু’টিকে দত্তক দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement