গবেষণার ফলাফল জানতে কমপক্ষে তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে। প্রতীকী ছবি।
কয়েক মাস অন্তর কি নিতে হবে করোনার প্রতিষেধক? নাকি, শরীরের কোষের স্মৃতিশক্তিই ওই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচাবে? এ বার সেই বিষয় নিয়েই দেশে গবেষণা শুরু করছে আইসিএমআর। তাতে অংশ নিচ্ছে শহরের দুই সরকারি হাসপাতাল— কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এবং এসএসকেএম। তবে সেই গবেষণার ফলাফল জানতে কমপক্ষে তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে।
সাধারণ নাগরিক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিডের বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন, প্রায় ছ’মাস হল। তার পরে আবার বুস্টার নিতে হবে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলা নেই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দ্বিতীয় অথবা বুস্টার ডোজ় নেওয়ার পরে, দু’ক্ষেত্রেই ছয় থেকে ন’মাস শরীরে অ্যান্টিবডি থাকছে। তার পরে? সেটা এখনও পর্যন্ত অজানা বলেই দাবি চিকিৎসক ও গবেষকদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রতিষেধক দেওয়া মাত্রই শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। যা শরীরে প্রবেশ করা ভাইরাসকে প্রতিহত করে। তবে, নির্দিষ্ট সময় পরে সেই অ্যান্টিবডি কমে যায়। কিন্তু শরীরের মেমরি সেল (স্মৃতি কোষ) তখনও কতটা কার্যকর, সেটা জানতে এই গবেষণা করছে আইসিএমআর।
চিকিৎসকেরা আরও জানাচ্ছেন, ফের ভাইরাস হানা দিলে ওই মেমরি সেল অ্যান্টিবডি তৈরির কোষে রূপান্তরিত হয়। যে প্রতিষেধকের মেমরি সেল যত বেশি সক্রিয়, সেই প্রতিষেধক তত বেশি কার্যকর। সূত্রের খবর, কলকাতা, আমদাবাদ, বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে হবে এই গবেষণা। কলকাতা ও আমদাবাদে দু’টি করে হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ছ’টি হাসপাতালের মোট ৬০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর উপরে গবেষণাটি হবে।
প্রকল্পের দায়িত্বে প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর আইসিএমআর-এর মলিকিউলার বায়োলজির গবেষক, শান্তসবুজ দাস। রাজ্যের কো-ইনভেস্টিগেটর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের শিক্ষক-চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার এবং পিজি-র ফার্মাকোলজিস্ট মিতালি চক্রবর্তী। অরুণাংশু বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীদের সকলেরই করোনা প্রতিষেধকের তিনটি ডোজ় নেওয়া হয়েছে। তাই তাঁদের উপরই গবেষণা হবে। বুস্টার ডোজ় নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রয়োজন কি না, জানতে এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ।’’
জানা যাচ্ছে, প্রতিটি হাসপাতাল থেকেই ১০০ জন করে স্বাস্থ্যকর্মীকে বাছা হচ্ছে। তাঁদের প্রতি ছ’মাস অন্তর মোট পাঁচ বার পরীক্ষা করা হবে। তিন বছর ধরে চলবে গবেষণা। শেষে ওই ছয় শহরের তথ্য বিশ্লেষণ করে, করোনার প্রতিষেধক কত দিন কার্যকর থাকে, তার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হবে।