EM Bypass

রাতে বাড়ি ভেঙে ঢুকে পড়ল লরি

আর একটু হলেই সেই লরিতে পিষে যেতে পারত পুরো পরিবার। কিন্তু মৃত্যু যেন শেষ মুহূর্তে পথ বদলে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছে সবাইকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০২:১৫
Share:

—ফাইল ছবি

মাঝরাতে সবাই তখন গভীর ঘুমে। আচমকা বিকট শব্দে কেঁপে উঠল চার দিক। ঘুম ভাঙতেই চোখ কপালে সকলের। কারণ, বাড়ি ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েছে বিরাট একটি লরি। আর একটু হলেই সেই লরিতে পিষে যেতে পারত পুরো পরিবার। কিন্তু মৃত্যু যেন শেষ মুহূর্তে পথ বদলে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছে সবাইকে। শুক্রবার রাতে, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের উপরে দত্তাবাদের ঘটনা।

Advertisement

কিন্তু শনিবারও আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছিল পরিবারটিকে। এমনকি ভয় কাটেনি ওই পরিবারের প্রতিবেশীদেরও। বাড়ির বাসিন্দা পিন্টু মণ্ডল এক ঘরে স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে ঘুমোচ্ছিলেন। অন্য ঘরে ঘুমিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। পিন্টুর কথায়, ‘‘বিকট আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলতেই দেখি, কয়েক হাতের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে লরি। কোনও মতে ছেলে আর স্ত্রীকে ঘর থেকে বার করে নিয়ে মা-বাবার ঘরের দিকে যাই। ভেঙেচুরে যাওয়া সেই ঘর তখন অন্ধকার, বিদ্যুতের তার ঝুলছে। বিদ্যুতের ঝটকাও লাগে।’’

পিন্টুদের সাহায্য করতে তত ক্ষণে ছুটে এসেছেন তাঁদের প্রতিবেশিরাও। তাঁরা জানান, প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ঘরের কোণ থেকে পিন্টুর বাবা হীরালালবাবুকে টেনে বার করা গেলেও তাঁর মা মিনতিদেবীকে প্রথমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ভেঙে যাওয়া খাটের নীচে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিলেন মিনতিদেবী। উদ্ধার করে তাঁদের দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বেপরোয়া গতিতে চলা লরিটি রাত পৌনে ৩টে নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দত্তাবাদের ওই বাড়িতে ধাক্কা মেরে ঢুকে যায়। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের দিক থেকে উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিল বারো চাকার ওই লরিটি। বেঙ্গল কেমিক্যাল মোড় পেরনোর পরে একটি অ্যাপ-ক্যাবকে পাশ কাটাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারান লরির চালক। ৩ জন আহত হন। পিন্টুর কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম, বাবা-মাকে বাঁচাতে পারব না।’’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লরিটি ডান দিকে বুলেভার্ডে উঠে লোহার গ্রিল ভেঙে উল্টো দিকের লেনে ঢুকে পড়ে। লেন পার করে ফুটপাতের গ্রিল ভেঙে প্রথমে একটি দোকান দুরমুশ করে লরিটি পিন্টুদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। লরির ধাক্কায় আরও একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধাননগর পুরসভার ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ রাজেশ চিরিমার। মেয়র পারিষদ জানান, লরিটি আর দু’-তিন ফুট এগোলে পুরো পরিবারটিই চাপা পড়ত।

পুলিশ জানায়, লরির চালক পলাতক। লরিটি আটক করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement