সার বেঁধে: সকাল থেকে বন্ধ সার্কাস অ্যাভিনিউ। তার জেরে ধীর গতিতে গাড়ি চলছে পার্ক সার্কাস এলাকায়। বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আশঙ্কা ছিল, উড়ালপুলের কাজের জন্য স্তব্ধ হবে পার্ক সার্কাস ও সংলগ্ন রাস্তা। তবে নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, শুরুতে হোঁচট খেলেও অবস্থা ততটা খারাপ হয়নি। তাঁদের মতে, পুলিশ যানশাসনে এ দিন কোনও মতে পাশ করে গিয়েছে।
মা উড়ালপুলের সঙ্গে এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলের পশ্চিম দিকের র্যাম্প যুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার রাত থেকে। যার জন্য রাত থেকেই সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের দক্ষিণ দিকের একাংশ (কড়েয়া রোড থেকে বেকবাগান রো-এর মোড় পর্যন্ত) বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে আশঙ্কা ছিল, সার্কাস অ্যাভিনিউ বন্ধের কারণে পার্ক সার্কাস সংলগ্ন বিভিন্ন রাস্তায় প্রবল যানজট হতে পারে। কিন্তু কলকাতা পুলিশের তৎপরতায় সাময়িক যানজট হলেও তা তীব্র আকার নেয়নি।
সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের একাংশ বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে কলকাতা পুলিশ গত সপ্তাহে পার্ক সার্কাস জু়ড়ে হোর্ডিং ও পোস্টার লাগিয়েছিল। তাতে গাড়িচালকদের সতর্ক করে সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের পরিবর্তে পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণি ধরতে বলা হয়। এ দিন সকাল থেকেই পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়-সহ একাধিক রাস্তায় পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন ছিল। ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমারও যান চলাচল পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন। তাঁর দাবি, ‘‘গাড়ির চাপ বেশি থাকায় পার্ক সার্কাস এলাকা পার হতে তুলনায় বেশি সময় লাগলেও রাস্তা বন্ধ হওয়ার জন্য যানজট হয়নি।’’
এ দিন দুপুরে পার্ক সার্কাসে গিয়ে দেখা গেল, সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের একাংশ বন্ধ থাকায় দুপুর ১টার পরে ই এম বাইপাসের দিক থেকে আসা বড় গাড়ি বা বাসকেও এ জে সি বসু রোড উড়ালপুল দিয়ে পাঠানো হচ্ছে। ডিসি (ট্র্যাফিক) বলেন, ‘‘পূর্ব-নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, পার্ক সার্কাস কানেক্টর বা গড়িয়াহাটের দিক থেকে আসা বাস ও বড় গাড়িগুলিকে দুপুর ১টার পরে শেক্সপিয়র সরণি হয়ে এ জে সি বসু রোড ধরতে হবে। কিন্তু দুপুরের দিকে একাধিক স্কুল ছুটি হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত শেক্সপিয়র সরণির পাশাপাশি বাস বা বড় গা়ড়িকে সোজা এ জে সি বসু রোড উ়ড়ালপুলে তোলা হবে।’’
সার্কাস অ্যাভিনিউ বন্ধ থাকায় এ দিন কংগ্রেস এগজিবিশন রোড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, কড়েয়া রোড, মেহের আলি রোড, পার্ক স্ট্রিট, মল্লিকবাজার মোড় ও পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড়ে গাড়ির চাপ ছিল অনেকটাই বেশি। রাস্তা বন্ধের বিষয়টি জানা না থাকায় বেশ কিছু গাড়িচালক এ দিন ভুল পথে চলে আসেন। সেই গাড়িকে ঘুরিয়ে অন্য পথে পাঠাতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
ডিসি (ট্র্যাফিক) বলেন, ‘‘সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের একাংশ তিন মাস বন্ধ থাকবে। প্রথম দিন যান চলাচল স্বাভাবিকই ছিল। আগামী কয়েক মাসও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সতর্ক থাকব।’’ তবে প্রথম দিন টেনেটুনে সফল হলেও আগামী তিন মাস পুলিশ পার্ক সার্কাসের মতো এলাকায় যান চলাচল কতটা স্বাভাবিক রাখতে পারবে, সেটাই চ্যালেঞ্জ। বিশেষত, সার্কাস অ্যাভিনিউ দিয়ে এ জে সি বসু রোডমুখী বাস, মিনিবাস ও গাড়ি যাতায়াত করে। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, এ জে সি বসু রোড উড়ালপুলের উপরে অনেক সময়ে গা়ড়ি খারাপ হয়ে যায়। কড়েয়া রোড ও মেহের আলি রোডের মতো রাস্তা অপ্রশস্ত। সব মিলিয়ে বিকল্প রাস্তার সাহায্যে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা পুলিশের কাছে যে চ্যালেঞ্জ, তা মানছেন ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা। আগামী কয়েক মাস পার্ক সার্কাস এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত ট্র্যাফিক পুলিশ থাকবে বলে জানান ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার।