ভয়াবহ: রাস্তায় হয়ে রয়েছে গভীর গর্ত। সেসব পাশ কাটিয়েই চলছে গাড়ি। হাওড়া সেতু থেকে বঙ্কিম সেতুতে ওঠার মুখে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
দুর্বিষহ বললেও কম বলা হবে। কোথাও পিচ উঠে ইটের টুকরো বেরিয়ে এসেছে। কোথাও সেটাও উঠে গভীর বড় গর্ত হয়ে রয়েছে। বর্ষায় সেখানে জল জমে থাকায় বিপদ মাপতে পারছেন না গাড়িচালক। ফলে প্রতি মুহূর্তের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে নবান্ন ও হাওড়া স্টেশনের সামনে থেকে বিদ্যাসাগর সেতু এবং বঙ্কিম সেতুতে ওঠার মুখ। দু’টি সেতু-পথের একটি বিদ্যাসাগর সেতুর ক্যারি রোড থেকে কলকাতামুখী অ্যাপ্রোচ রোড। অন্যটি, হাওড়া স্টেশনের দিক থেকে হাওড়া ময়দানে যাওয়ার জন্য বঙ্কিম সেতুতে ওঠার রাস্তা।
পুজোর আগে হাওড়া পুরসভা যখন অলিগলি এবং বড় রাস্তার মেরামত জোরকদমে করতে চাইছে, তখন দু’টি সেতুতে ওঠার রাস্তার বেহাল দশা নিত্যদিন যানজটের কারণ হচ্ছে। হাওড়া সিটি পুলিশের অভিযোগ, দু’টি রাস্তা মেরামত করতে চেয়ে দায়িত্বাধীন সংস্থার আধিকারিকদের চিঠি দিয়েও ফল হয়নি। বিদ্যাসাগর সেতু-পথের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি) এবং বঙ্কিম সেতুর রাস্তা মেরামতের দায়িত্বে আছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। অভিযোগ, চলতি বছরে এই দুই সংস্থা ওই পথের কোনও মেরামতির কাজ করেনি। অথচ প্রতি বছরই বর্ষার পরে, পুজোর মুখে কঙ্কালসার ওই পথ সারাই করে চলাচলের যোগ্য করা হয়।
হাওড়া শহরের রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের ভার রয়েছে মূলত চারটি সরকারি সংস্থার উপরে। সেগুলি হল হাওড়া পুরসভা, হাওড়া ইম্প্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (এইচআইটি), পূর্ত দফতর এবং কেএমডিএ। হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তা বলেন, ‘‘ক্যারি রোডের দিক থেকে বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার রাস্তা মেরামতের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা এইচআরবিসি ও বঙ্কিম সেতুর রক্ষণাবেক্ষণকারী কেএমডিএ-কে দু’টি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবুও তাপ্পি মারা ছাড়া ভাল ভাবে সারানো হয়নি। দু’টি ভাঙাচোরা রাস্তার জন্যই প্রতিদিন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের মতো ব্যস্ত রাস্তায় যানজট হচ্ছে।’’
অন্য দিকে, হাওড়া পুরসভা দাবি করেছে, গত জানুয়ারি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত ২০ কোটি টাকা খরচ করে ৭৬টি রাস্তা মেরামত হয়েছে। ১৫৭টি প্রস্তাবিত রাস্তার কাজ চলছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি টাকা। পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুজোর আগেই হাওড়ার সব বড় রাস্তা, অলিগলি সারাইয়ের কাজ শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ছাড়াও কেএমডিএ, এইচআইটি ও পূর্ত দফতরের দায়িত্বে থাকা শহরের ভাঙা রাস্তা পুজোর আগে মেরামত করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’
বঙ্কিম সেতু-পথের মেরামতি নিয়ে কেএমডিএ, হাওড়ার দায়িত্বে থাকা এক কর্তা বলেন, ‘‘রাস্তা মেরামতির জন্য টাকা চেয়ে সদর দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখনও অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় কাজ করা যাচ্ছে না।’’ এইচআরবিসি-র এক কর্তার দাবি, ‘‘বৃষ্টির জন্য কাজে হাত দেওয়া যায়নি। ক্যারি রোডের দিকে অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ দ্রুত শুরু হবে।’’