ফাইল চিত্র।
ট্রেড লাইসেন্স-ফি বাবদ ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষে আদায় হয়েছিল ৫১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮ কোটি টাকা। অতিমারির সময়ে কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে কর আদায় তলানিতে ঠেকলেও দিশা দেখিয়েছে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ।
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭-’১৮ সালে ট্রেড লাইসেন্স বাবদ কর আদায় হয়েছিল ৫৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। ২০১৮-’১৯ সালে সেই পরিমাণ ছিল ৫৪ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা, আর ২০১৯-’২০ সালে আদায় হয়েছিল ৫৫ কোটি। দু’বছর আগে করোনার প্রকোপ শুরু হতেই পুরসভার সমস্ত বিভাগের কর আদায় কমতে থাকে। তবে ২০২০-’২১ অর্থবর্ষেও পুরসভা ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৫৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা আয় করতে পেরেছিল।
মূলত সম্পত্তিকর থেকেই পুরসভা মোটা পরিমাণ টাকা আয় করে। এ ছাড়াও বিজ্ঞাপন, গাড়ি পার্কিং, বিনোদন কর এবং ট্রেড লাইসেন্স থেকে কর আদায় হয়ে থাকে। পুরসভা সূত্রের খবর, ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের তরফে ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে আদায়ের পরিমাণ সর্বকালীন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। পুরসভার অন্যান্য সব দফতরে আয় বাড়েনি। কিন্তু লোকবল কম থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ আদায় বাড়াতে পেরেছে, তাতে খুশি পুরসভার শীর্ষ মহল। পুরসভার এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে পুরসভার অন্যান্য বিভাগগুলি থেকে রাজস্ব আদায় যেখানে আশাব্যঞ্জক নয়, সেখানে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগ নিঃসন্দেহে ভাল কাজ করেছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পরে ট্রেড লাইসেন্স বিভাগেও কর আদায় কমে গিয়েছিল। বকেয়া আদায় বাড়াতে তাই সমীক্ষা শুরু করে দফতর। বিভাগ সূত্রের খবর, পুরসভাকে ট্রেড লাইসেন্স-ফি না দিয়েই লুকিয়ে দিনের পর দিন ব্যবসা করছিলেন বহু ব্যবসায়ী। ১৪৪টি ওয়ার্ডে ঠিকানা ধরে ধরে পুরসভার লাইসেন্স বিভাগের ইনস্পেক্টরেরা ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে লাইসেন্স-ফি আদায় করেছেন। লাইসেন্স বিভাগের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখন অনলাইনে কর জমা দেওয়ার সুবিধা রয়েছে। আমরা শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে ঠিকানা ধরে ধরে ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে এসেছি, কী ভাবে অনলাইনে ফি জমা দেওয়া হয়।’’
তবে, এত কিছু করেও কয়েক লক্ষ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পুরসভা ট্রেড লাইসেন্স-ফি পায় না বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, নিয়ম মতো যে কোনও ব্যবসা করতে গেলে পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হয়। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বহু মানুষ আছেন, যাঁরা পুরসভাকে অন্ধকারে রেখেই বাড়িতে ব্যবসা শুরু করেছেন। ওয়ার্ড ধরে ধরে সমীক্ষা করা পুরসভার পক্ষে সম্ভব নয়।’’ লাইসেন্স বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘মাত্র ৩০০ কর্মীকে নিয়ে দফতরের কাজ সামলাতে হয়। প্রচুর ইনস্পেক্টরের পদ ফাঁকা। শূন্য পদ পূরণ হলে ওয়ার্ড ধরে যাচাইয়ের কাজে সুবিধা হবে। কর আদায় আরও বাড়বে।’’