টাউন হল।
টাউন হলের ঠান্ডা জলের যন্ত্রটি চার বছর ধরে পড়েছিল। অবশেষে তার ভাগ্য নির্ধারণ করলেন পুর আধিকারিকেরা। যন্ত্রটি নিয়ে কী করা হবে, তা নিয়েই টালবাহানা চলছিল। আর তাই চার বছর পরে টাউন হলের ঠান্ডা জলের যন্ত্র বসতে চলেছে পাইকপাড়ার মোহিত মৈত্র মঞ্চে!
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, টাউন হলে বসানোর জন্য একটি ঠান্ডা জলের যন্ত্র কেনা হয়েছিল ২০১৪ সাল। জরুরিভিত্তিতে সেখানে সে যন্ত্র বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। খরচ ধরা হয়েছিল প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। সেই মতোই ই-দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল ২০১৪ সালের অক্টোবরে। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়ে গিয়েছিলয়। তার দু’মাস পরেই অর্থাৎ, মার্চ মাসে যন্ত্রটি কেনা হয়। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু তার পরেই সমস্যার সূত্রপাত।
সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, টাউন হলের সংস্কার করা হবে। সেই সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ত দফতরকে। আইআইটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে শুরু হয় টাউন হলের সংস্কারের কাজ। দফায় দফায় রিপোর্ট জমা পড়ে সংস্কার নিয়ে। হেরিটেজ নীতি অক্ষুণ্ণ রেখে কী ভাবে সংস্কার করা যায়, তা নিয়ে একাধিক বৈঠকও করেন পুর কর্তৃপক্ষ। আর সেই পর্বে ঢাকা পড়ে যায় ঠান্ডা জলের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি। পুরসভা সূত্রের খবর, তার পর থেকে গত চার বছর ধরে যন্ত্রটি টাউন হলেই পড়ে রয়েছে। কিন্তু এত দামী যন্ত্র এ ভাবে পড়ে থাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভার অন্দরে আলোচনা চলছিল। তবে ওই যন্ত্রটি কোথায় বসানো হবে, তার নির্দিষ্ট জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
শেষ পর্যন্ত পুরসভার আলো দফতর পাইকপাড়ার মোহিত মৈত্র মঞ্চে একটি জায়গা চিহ্নিত করে। ইতিমধ্যে ওই মঞ্চ সংস্কারের জন্যও একটি প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। এক নম্বর বরো অফিস সূত্রের খবর, গত বেশ কয়েক বছর ওই মঞ্চে বড় রকম কোনও সংস্কারের কাজ হয়নি। এক নম্বর বরো অফিসের চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই মঞ্চ সংস্কার হয়নি। বসার
জায়গা থেকে শুরু করে মঞ্চের ছাদ, ভিতরের দেওয়াল, সমস্ত কিছুরই সংস্কার প্রয়োজন। সেই প্রস্তাবও তৈরি করা হয়েছে।’’
এই পরিস্থিতিতে আলো দফতরও প্রস্তাব দেয় যে, ওই যন্ত্রটি ওখানে বসানো যেতে পারে। মেয়র পরিষদের বৈঠকে সে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। লোকসভা নির্বাচন মেটার পরেই সে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এত দিন তো এমনিই পড়েছিল। কোথায় বসানো হবে, তাই ঠিক করা যাচ্ছিল না। এখন তবু একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বার বসানোও হয়ে যাবে!’’