দেখে শিখতে চাইছে বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুলও

পরমা উড়ালপুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রস্তাবিত বজবজ-জিঞ্জিরাবাজার উড়ালপুলের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কথা ইতিমধ্যেই ভাবা হয়েছে। এ বার কেএমডিএ-র নজরে বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল।

Advertisement

অশোক সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৩২
Share:

নির্মীয়মাণ বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

পরমা উড়ালপুল থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রস্তাবিত বজবজ-জিঞ্জিরাবাজার উড়ালপুলের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কথা ইতিমধ্যেই ভাবা হয়েছে। এ বার কেএমডিএ-র নজরে বিবেকানন্দ রোড উড়ালপুল। গিরিশ পার্ক এলাকায় নির্মীয়মাণ ওই উড়ালপুলের দুই মুখে কী ভাবে যানজট এড়ানো যায়, তার পথ খুঁজতে বসল তারা। মুশকিল আসানের জন্য এ ব্যাপারে সংস্থার তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে। মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে বন্দর ও কেএমডিএ কর্তারা একপ্রস্ত কথা বলেন। শীঘ্রই এ নিয়ে পুলিশ, পুরসভা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহের সঙ্গেও বৈঠক করবেন নগরোন্নয়ন দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরা।

Advertisement

এই উড়ালপুলের একটি মুখ এসে পড়বে স্ট্র্যান্ড রোডে। উড়ালপুলের দুই ভাগের রাস্তার একটি দিয়ে গাড়ি নামবে, অন্যটি দিয়ে উঠবে। একমুখী দুই রাস্তা যেখানে মূল রাস্তায় এসে মিশেছে, তার চারপাশে যাতে খানিকটা খোলা জায়গা থাকে, সে জন্য বন্দর লাগোয়া কিছু জমি দরকার। প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়তোষ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এ ছাড়াও সিআরপি ব্যারাকের সামনে নির্দিষ্ট কিছু কাজের জন্য বন্দরকে আমরা বলেছি। চিঠিও দেওয়া হয়েছে।’’

উড়ালপুলের অন্য প্রান্তটি এসে মিশবে চিত্তরঞ্জন অ্যভিনিউয়ের অদূরে গণেশ টকিজের সামনে। প্রিয়তোষবাবু বলেন, ‘‘আমি নিজে ওখানে সমীক্ষা করে এসেছি। যান-নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জট এড়ানো সম্ভব। সিগন্যালিংয়ের ব্যবস্থা কতটা প্রয়োজন, তা পুলিশকে জানাব।’’ তিনি জানান, বিভিন্ন বিভাগের পদস্থ আধিকারিক-ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গেও বৈঠক হবে।

Advertisement

২.২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বিবেকানন্দ উড়ালপুলের কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালের মার্চ মাসে। এর পরে ২০১১-র অগস্ট, ’১২-র মার্চ, ’১৩-র ডিসেম্বর, ’১৫-র জানুয়ারি— কাজ শেষের চার লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কবে কাজ শেষ হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউই। সরকারি তরফেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, এখনও মোট কাজের ৩০ শতাংশও হয়নি। গোড়ায় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৮ কোটি ২ লক্ষ টাকা। কিন্তু কাজে মন্থর গতির জেরে প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে সেই খরচ। অসম্পূর্ণ কাজের জেরে নিত্যযাত্রী এবং বড়বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরাও দৈনিক সঙ্কটে জেরবার।

প্রকল্পের কাজে কেন এই দীর্ঘসূত্রতা? কেএমডিএ কর্তাদের ব্যাখ্যা, ওই এলাকায় জল-বিদ্যুৎ-গ্যাসের ভূগর্ভস্থ সংযোগগুলি এত পুরনো যে সেগুলি সরাতে সমস্যা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বাধা এসেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের তরফে। সরকারি বিভিন্ন বিভাগের থেকে অনুমতি পেতেও বহু সময় লেগেছে। নগরোন্নয়ন দফতরের এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘উড়ালপুলে গাড়ি ওঠানামার সুবিধার জন্য স্ট্র্যান্ড রোডের পুরনো টাঁকশাল ভবনের বিপরীতে সিআরপি অফিসের ফটকের মুখে একটি মন্দির সরাতে হবে। সিআরপি-র ফটকও সরাতে হবে সাময়িক ভাবে। কিন্তু কিছুতেই অনুমতি মিলছে না।’’ এ ব্যাপারে সিআরপি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘টাঁকশাল ভবনটির মালিক অর্থ মন্ত্রক। ওঁদের আমরা কেএমডিএ-র বক্তব্য জানিয়েছি। মন্ত্রক থেকে লিখিত নির্দেশ না এলে আমাদের কিছু করার নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement