—প্রতীকী ছবি।
তাপ্তিগঙ্গা এক্সপ্রেসে ঘরমুখী জনতার বাঁধভাঙা ভিড় সামলাতে না পারায় সুরাত স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ঘটেছে এক যাত্রীর। শনিবারের ওই ঘটনায় আহত হন একাধিক যাত্রী। খোদ রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদৌসের কেন্দ্র সুরাতে রেলের ওই অব্যবস্থার ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে অবশ্য নড়েচড়ে বসেছে রেল। দীপাবলি এবং আসন্ন ছটপুজো উপলক্ষে একাধিক স্টেশনে ঘরমুখী যাত্রীদের ভিড় সামলাতে তাই রবিবার সকাল থেকেই রেলকর্মী এবং আধিকারিকদের বিশেষ তৎপরতা দেখা গিয়েছে হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতার মতো বড় ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে। এ ছাড়াও, কালীপুজোর ভিড় সামলাতে দুপুরের পর থেকে রেলের তরফে বিশেষ তৎপরতা ছিল শহরতলির একাধিক স্টেশনে। নৈহাটি, বারাসত, বারুইপুর, দক্ষিণেশ্বর, আসানসোল, রামপুরহাট-সহ একাধিক স্টেশনেও ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
রেল সূত্রের খবর, দীপাবলি এবং ছটপুজো উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক যাত্রী দূরপাল্লার ট্রেনে মূলত বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন গন্তব্যে সফর করছেন। টিকিটের প্রবল চাহিদা রয়েছে হাওড়া-নয়াদিল্লি রুটেও। চাহিদা মেটাতে একাধিক রুটে প্রায় প্রতিদিনই বিশেষ ট্রেন চালানো হলেও তার পরেও অপেক্ষার তালিকায় থেকে গিয়েছেন অনেকেই। বস্তুত সেই সব যাত্রীর ভিড়েই শনিবার ভয়াবহ অবস্থা হয় সুরাত স্টেশনে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন এসে পৌঁছতেই হুড়মুড় করে ট্রেনে ওঠার চেষ্টায় যাত্রীরা একে অপরের উপরে পড়ে যান। এমন পরিস্থিতি হয় যে বাতানুকূল কামরায় বৈধ এবং নিশ্চিত টিকিট থাকা সত্ত্বেও অনেকে নির্দিষ্ট কামরায় উঠতে পারেননি। আগাম প্রস্তুতিহীন আরপিএফ কর্মীদেরও সে সময়ে বিশেষ তৎপর হতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।
ওই ঘটনার পরে রবিবার হাওড়া, শিয়ালদহ এবং কলকাতা স্টেশনে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনের সাধারণ কামরার সামনে যাত্রীদের সামলাতে তৎপর হতে দেখা গিয়েছে আরপিএফ ও রেল পুলিশকে। প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের আগাম লাইনের ব্যবস্থা করা ছাড়াও বিভিন্ন কামরার সামনে রক্ষী মোতায়েন করে রেল। বিভিন্ন ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মে নজরদারির দায়িত্বে থাকা রক্ষীদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করা ছাড়াও সিসি ক্যামেরায় নজরদারি বাড়ানো হয়। ট্রেনের ভিড়ের ছবি মোবাইলে তুলে আধিকারিকেরা দ্রুত পাঠিয়ে দিচ্ছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে, যাতে প্রয়োজনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা যায়। এ ছাড়া প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনে বিদ্যুৎবিভ্রাট এড়াতেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। ভিড়ে কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য মেডিক্যাল দলকেও তৈরি রাখা হয়েছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাকিয়ে রেল উপযুক্ত পদক্ষেপ করেছে। উৎসবের আনন্দ থেকে যাতে কেউ বঞ্চিত না হন, তার জন্যই এই বিশেষ সতর্কতা।’’