তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ।—নিজস্ব চিত্র।
বাম-বিজেপি গোপন আঁতাতের অভিযোগে উত্তেজনা ছড়াল দমদমের নাগেরবাজারে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে সেখানকার একটি গেস্ট হাউসে মুকুল রায়ের সঙ্গে স্থানীয় এক সিপিএম নেতার গোপন বৈঠক চলছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। ওই গেস্ট হাউস ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। বিক্ষোভের পাশাপাশি ভাঙচুরও চালানো হয় দু’টি গাড়িতে। অশান্তির জেরে সাময়িক ভাবে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে যশোর রোড।
গাড়ি ভাঙচুরের খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের। উত্তেজনার খবর পেয়ে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনীও। পুলিশ সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারী কয়েক জনকে আটক করা হয়েছে। আপাতত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এই ঘটনায় তৃণমূলের অভিযোগ, স্থানীয় সিপিএম নেতা পল্টু দাশগুপ্তর সঙ্গে গোপন বৈঠক করছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। বাম-বিজেপির আঁতাতের দাবিও করেন তারা। এ দিনের ঘটনায় তৃণমূল কর্মীদের জড়িত থাকা কথা অস্বীকার করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর দাবি, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে তাদের দলের কোনও কর্মী-সমর্থক জড়িত নন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কোনও কর্মী এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। তৃণমূলের কোনও কর্মী গাড়ি ভাঙচুর করেনি। যা হয়েছে, বিজেপি কর্মীরাই করেছেন। টাকার লেনদেন চলছিল ওখানে। আসলে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর মানুষের সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করছে ওরা।’’
আরও পড়ুন: ১০ লক্ষ পোস্ট কার্ড, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানা লেখা, ‘জয় শ্রী রাম’ অভিযানে যুব মোর্চা
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে ‘নজরবন্দি’ রাজীব, গ্রেফতারি নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায় আগামিকাল
বাম-বিজেপির গোপন আঁতাত বা টাকা লেনদেনের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের দাবি, এ দিন রাতে একই বাড়িতে নিমন্ত্রিত ছিলেন দলীয় নেতা শমীক ভট্টাচার্য এবং মুকুল রায়। তখনই তৃণমূলের লোকজন বাড়ি ঘেরাও করে। গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের বৈঠকে অস্বাভাবিক কিছু নেই বলে দাবি করেন দলের নেতা সায়ন্তন বসুও। তাঁর কথায়, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ কারও সঙ্গে বৈঠক করতেই পারেন। তৃণমূল দুষ্কৃতীদের দল। নির্বাচন কমিশনের উচিত ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। পুলিশের উচিত, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা।’’
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন সিপিএম নেতা অমিয় ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, ‘‘টাকার লেনদেন চলছিল, তা জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানলেন কী ভাবে? পল্টু দাশগুপ্ত নামে দমদম অঞ্চলে এক জন সিপিএম নেতা ছিলেন বটে। তবে এখন এ নামে সিপিএমের কোনও স্তরে কোনও নেতা নেই।’’