ব্যস্ততা: ২১শে-র সমাবেশের মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার, ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ।
২১শে সমাবেশের মঞ্চ ঘিরে বৃহস্পতিবার দিনভর চলেছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। নিরাপত্তার বজ্রআঁটুনি রাখতে চূড়ান্ত ব্যস্ত ছিল পুলিশও। নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে সকাল থেকে দফায় দফায় সভাস্থল পরিদর্শন করেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা। ঘুরে যান মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা। এসেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও। এ বছর সমাবেশের ভিড় গত বছরকে টেক্কা দেবে ধরে নিয়েই চূড়ান্ত প্রস্তুতি রাখছে পুলিশ।
এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ ধর্মতলার সভাস্থল পরিদর্শনে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি-সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং লালবাজারের কর্তারা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় আধ ঘণ্টা ধর্মতলায় থেকে তিনি চলে যান।
প্রতি বছরের মতো এ বারও ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তৃণমূলের ২১শে-র সমাবেশের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মূল সমাবেশের জন্য তিনটি স্তরে তৈরি মঞ্চটি এ বার আকারে অনেকটাই বড়। প্রায় ৫০০ জন সেখানে বসতে পারবেন। মূল মঞ্চটি মাটি থেকে পর্যায়ক্রমে ১১, ১২ এবং ১৩ ফুট উঁচু। দৈর্ঘ্যে ৮০ ফুট এবং প্রস্থে ৪২ ফুট। ত্রিস্তরীয় সভামঞ্চটির প্রথম ভাগে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও দলের শীর্ষ নেতারা থাকবেন।দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ভাগে থাকবেন দলের অন্য নেতারা, পুরপ্রতিনিধি এবং মৃতদের পরিবারের সদস্যেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সভামঞ্চের নিরাপত্তা জোরদার করতে গোটা ধর্মতলা চত্বরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মূল মঞ্চেরনিরাপত্তা ভাগ করা হয়েছে তিনটি জ়োনে। তার নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চার জন উপ-নগরপালের হাতে। তাঁদের সঙ্গে থাকছে পুলিশ আধিকারিকদের বিরাটবাহিনী। এ ছাড়া, মূল মঞ্চের সামনে ১০০ মিটারের মতো অংশ, অর্থাৎ ধর্মতলা এবং বি বা দী বাগ সংলগ্ন এলাকাকে নিরাপত্তার কারণে ১০টি জ়োনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি জ়োনের দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে উপ-নগরপাল।
লালবাজার জানিয়েছে, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ সংলগ্ন ২০টি বহুতলের ছাদ থেকে চলবে নজরদারি। প্রতিটি ছাদেথাকবেন দু’জন করে সশস্ত্র পুলিশকর্মী। সমাবেশের আশপাশের বহুতল থেকে করা হবে ভিডিয়ো রেকর্ডিং।
লালবাজার সূত্রের খবর, সমাবেশের নিরাপত্তা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকছেন এক জন বিশেষ কমিশনার এবং দু’জন অতিরিক্ত নগরপাল। তাঁদের অধীনে থাকবেন আট জন যুগ্ম-নগরপাল। এ ছাড়া, গোটা এলাকায় সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারির পাশাপাশি থাকবেন সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও।
এ দিন সকাল থেকে ধর্মতলা চত্বরে তৃণমূল কর্মীদেরভিড় যত বেড়েছে, ততই বেড়েছে পুলিশি তৎপরতা। কার্যত গোটামঞ্চটিকে ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। পুলিশ কুকুর এনে চলেছে দফায় দফায় তল্লাশি। বিভিন্ন সময়ে ঘুরে গিয়েছেন লালবাজারের একাধিক শীর্ষ কর্তা।
এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সভার কাছে যে পুলিশকর্মীরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন, তাঁদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাত থেকে উঁচু বহুতলের উপর থেকেও নজরদারি চলবে।’’