তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে তর্কাতর্কি চৌরঙ্গি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রীতেশ তিওয়ারির (বাঁ দিকে)। জখম তৃণমূল কর্মী। বৃহস্পতিবার।— নিজস্ব চিত্র।
ভোট প্রচারের শেষ লগ্নে তৃণমূল এবং বিজেপি-র সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল চৌরঙ্গি বিধানসভা কেন্দ্রের হিন্দ সিনেমা লাগোয়া অঞ্চল। দু’পক্ষেরই অভিযোগ, তারা অপর পক্ষের হাতে আক্রান্ত হয়েছে।
চৌরঙ্গি এবং বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে উপনির্বাচন কাল, শনিবার। বৃহস্পতিবার ছিল তার প্রচারের শেষ দিন। সাড়ে এগারোটায় হিন্দ সিনেমার কাছে বিজেপি এবং তৃণমূলের দু’টি মিছিল মুখোমুখি হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে কিছু ক্ষণ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরে দুই দলের মিছিল দু’দিকে সরে যায়। এই ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়। ঘটনাস্থলে যায় বৌবাজার এবং মুচিপাড়া থানার পুলিশ। আধা সামরিক বাহিনী যাওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিজেপি-র অভিযোগ, চৌরঙ্গিতে তাদের প্রার্থী রীতেশ তিওয়ারির নেতৃত্বে সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে যখন মিছিল বেরোয়, তখন এক দল তৃণমূল সমর্থক আচমকা বাঁশ এবং ব্লেড নিয়ে তাঁদের উপর চড়াও হন। কয়েক জন বিজেপি কর্মী জখম হন। বৌবাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়। রীতেশ বলেন, “চৌরঙ্গির তণমূল প্রার্থী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট ইন্দ্রনীল কুমারের নেতৃত্বে হামলা হয়। বিজেপি-র উত্থান দেখে ভয় পেয়ে তৃণমূল হামলা চালিয়েছে। পুলিশও কিছু করেনি।” এর আগেও তাঁর প্রচারে তৃণমূলের হামলার অভিযোগ করেছিলেন রীতেশ।
রীতেশের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ স্থানীয় থানার ওসি-কে সাসপেন্ড করার দাবি তুলেছেন। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্তকে চিঠি দিয়ে গোটা ঘটনা জানিয়েছে বিজেপি। সিদ্ধার্থনাথ বলেন, “উপনির্বাচনে ভয়-ভীতি কোনও বাধা হবে না বলে সুনীলবাবু আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। তা সত্ত্বেও এই হামলা হল। স্থানীয় থানার ওসি-কে নির্বাচন কমিশন সাসপেন্ড করুক।”
তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। তাদের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি সমর্থকরাই তাদের মিছিলের উপরে প্রথমে চড়াও হন। বাধা দিতে গিয়ে জখম হন তৃণমূল সমর্থকরা। ঘটনাস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েন দলের কাউন্সিলর সঞ্চিতা মণ্ডল। ইন্দ্রনীল বলেন, “আমাদের একটি মিছিল সকাল আটটা থেকে চৌরঙ্গিতে ঘুরছিল।
হিন্দ সিনেমার কাছে মিছিলে বিজেপি-র সমর্থকরা হামলা করে।” তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “উপনির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনে মধ্য কলকাতায় আমাদের মিছিলের উপর হামলা করেছে বিজেপি। আমাদের কাউন্সিলর-সহ বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন।”