প্রতীকী ছবি।
গণেশ প্রতিমার বিসর্জনে গিয়ে বাজেকদমতলা ঘাটে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসল পুলিশ।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য বেশ কিছু নিয়মাবলী বা গাইডলাইন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। সেই মতো বিভিন্ন বিভাগের ডেপুটি কমিশনারেরা নিজের এলাকার সব থানাকে কোথায় কোথায় বিশ্বকর্মা পুজো হচ্ছে তার তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মূর্তির উচ্চতা যাতে ১৭ ফুটের বেশি না হয় তা-ও দেখতে বলা হয়েছে। ক্লাব বা সংগঠনগুলিকে বলা হয়েছে, বিসর্জন কোন ঘাটে হবে তা আগাম জানাতে। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও রকম ডিজে বাজিয়ে প্রদর্শনী করা যাবে না। রবিবার রাতের ঘটনায় আহত অমর মণ্ডল সোমবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অবহেলায় মৃত্যু ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কলকাতা পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে উৎসবের মরসুম শুরু করতে মঙ্গলবারই সব থানাগুলিকে বিশ্বকর্মা পুজোর তালিকা-সহ নিয়মাবলী জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।’’ অন্য দিকে, ঠাকুরপুকুর-সহ বেশ কয়েকটি থানার তরফে ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারের কাছে মঙ্গলবারই পুজো কমিটির বিস্তারিত তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: মায়ের হৃদপিণ্ড দিয়ে চাটনি খেল ছেলে!
রবিবার রাতে বাজে কদমতলা ঘাটে বিসর্জন দিতে গিয়ে বাইশ ফুট উচ্চতার একটি গণেশ মূর্তির চালা আটকে যায় রেললাইনের বিদ্যুৎবাহী ওভারহেড তারে। সেই তার সরাতে গিয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। এর পরেই গণেশ-বিশ্বকর্মার মতো পুজোর জন্যেও নিয়মের কড়াকড়ির সিদ্ধান্ত হয় পুলিশের তরফে। লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিমা বির্সজনের ঘাটগুলিতে ওভারহেড পোস্ট লাগাতে রেলকে অনুরোধ করা হয়েছে। যাতে
১৭ ফুটের বেশি প্রতিমা এলে ওভারহেড তারের কাছে পৌঁছনোর আগেই ওই পোস্টে বাধা পায়। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজোর বিসর্জনের আগেই ওই পোস্ট তৈরির জন্য অনুরোধ করব রেলকে। সঙ্গে দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর মতো অন্য পুজোর বিসর্জনের দিন চক্ররেলের ওভারহেডের তারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে বলা হবে।’’
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ঘটনার রাতে বাজেকদমতলা ঘাটে ডিউটিতে থাকা পুলিশকর্মীরা জানবাজারের ‘শ্রী শ্রী গণেশ উৎসব কমিটি’র সদস্যদের বাইশ ফুট উচ্চতার গণেশ মূর্তি নিয়ে রেললাইন পার হতে বাধা দিয়েছিলেন। অভিযোগ, ক্লাবের সদস্যরা সেই বাধা মানেননি। ওই ক্লাবের শ’খানেক সদস্য পুলিশকর্মীদের কার্যত অগ্রাহ্য করেই ওভারহেড তার সরিয়ে প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাতেই ওই বিপত্তি ঘটে বলে তদন্তকারীদের দাবি।