বাড়ি যাওয়ার জন্য হাওড়া থেকে ট্রেন ধরবেন। ভোর হতেই তাই অ্যাপ ক্যাব বুক করে দুই বন্ধু বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু ট্রেনে ওঠার আগেই ঘটে গেল বিপত্তি। সাতসকালেই দুর্ঘটনায় আহত হলেন তাঁরা। শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাগান থানা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, সল্টলেক থেকে বাইপাস হয়ে ফুলবাগানের দিকে আসা ওই অ্যাপ ক্যাবে ধাক্কা দেয় আর একটি গাড়ি। অ্যাপ ক্যাবটি ছিটকে গিয়ে নির্মীয়মাণ মেট্রো রেলের স্তম্ভে ধাক্কা মারে। গুরুতর আহত হন ওই গাড়ির চালক এবং দুই যাত্রী। তাঁরা তিন জনেই শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের বক্তব্য, বিমানবন্দরের দিক থেকে আসা যে গাড়িটি ওই ক্যাবে ধাক্কা মারে সেটি সিগন্যালও ভেঙেছিল। কিন্তু সেই সময়ে ঘটনাস্থলে কোনও পুলিশ ছিল না। তাই ধাক্কা দেওয়ার পরে গাড়ি ফেলে ওই চালক পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণেই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের টহলদার ভ্যান আহতদের উদ্ধার করে। এই ঘটনায় দু’টি গাড়িই আটক করে পুলিশ।
আহত দুই ক্যাব-যাত্রীর নাম স্বাতী রাজ এবং গরিমা সিংহ। স্থানীয় সূত্রে খবর, গরিমা সল্টলেকের সিজে ব্লকে ভাড়া থাকেন। স্বাতী বেঙ্গালুরুতে চাকরি করেন। দু’জনেই আসলে ধানবাদের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার রাতে স্বাতী তাঁর বন্ধু গরিমার সঙ্গে দেখা করতে শহরে আসেন। এ দিন তাঁরা হাওড়া স্টেশন থেকে ধানবাদের ট্রেন ধরার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিছু দূর যেতেই ঘটে গেল ভয়াবহ দুর্ঘটনা। তাঁদের সঙ্গে আহত হন ক্যাবচালক স্বপন হালদারও। পরে গরিমার বাবা বিজয় সিংহ বলেন, ‘‘আপাতত মেয়ের অবস্থা স্থিতিশীল।’’
এ দিনের ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে পথ নিরাপত্তা নিয়ে। গাড়ির বেপরোয়া গতি রুখতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় স্পিড মিটার বসানো হয়েছে। পথ নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা প্রসারের পাশাপাশি, পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের উচ্চস্তর থেকে। তা সত্ত্বেও শহর দুর্ঘটনা মুক্ত হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন শহরবাসীর একাংশ। এই প্রসঙ্গে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, কর্মী সংখ্যা কম তাই রাত বারোটার পর থেকে ট্র্যাফিক সামলাতে সিগন্যালের উপরেই নির্ভর করতে হয়। তবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশের টহলদার গাড়ি ঘুরে বেড়ায়।