এই ঘরেই ঘটে বিস্ফোরণ। বুধবার, মহেশতলায়। নিজস্ব চিত্র।
চা তৈরি করার সময়ে বিস্ফোরণের জেরে স্বামী, স্ত্রী এবং তাঁদের তিন সন্তানের অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটল। বুধবার ভোরে, মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার টিজি রোডে। পুলিশের দাবি, সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরিয়ে তা বদ্ধ ঘরে জমে থাকায় এই অঘটন ঘটেছে। জখম পাঁচ জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁদের শরীরের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় পাশাপাশি চারটি ছোট ছোট ঘরে ভাড়া থাকে চারটি পরিবার। এ দিন ভোরে একটি ঘরের গৃহকর্তা সন্দীপ যাদব ঘুম থেকে উঠে চা তৈরি করার জন্য ওভেন জ্বালাতে যান। দেশলাই জ্বালানোর সময়েই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘরে বিস্ফোরণের জেরে সন্দীপ ও তাঁর স্ত্রী রানির পাশাপাশি ১১, ৭ ও ৬ বছরের তিনটি সন্তানও গুরুতর জখম হয়েছে। এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানান, জখম তিন শিশুর খোঁজখবর নিতে শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যেরা এ দিন হাসপাতালে যান। উল্লেখ্য, সন্দীপ নিজেই গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ করেন।
বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল ও পুলিশ। দমকলকর্মীদের অনুমান, রাতে কোনও ভাবে গ্যাসের নব খোলা ছিল। সারা রাত গ্যাস বেরিয়ে তা ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিল। জানলা-দরজা বন্ধ থাকায় সেই গ্যাস বেরোতে পারিনি। সকালে দেশলাই জ্বালাতেই ঘরে জমে থাকা গ্যাসে বিস্ফোরণ ঘটে। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এক কর্তাও বলেন, ‘‘ঘরে জমে থাকা গ্যাসেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপাতত ঘরটি ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পিকেট বসেছে।’’
বিস্ফোরণের শব্দ শুনে চলে আসেন প্রতিবেশীরা। বাড়িওয়ালা জবহর কেহর বলেন, ‘‘আওয়াজ শুনে সবাই ছুটে আসি। ঘরের ভিতরে ওদের জখম অবস্থায় দেখতে পেয়েই অ্যাম্বুল্যান্স ডাকা হয়। স্বামী-স্ত্রীর শরীরের কিছুটা ঝলসে গিয়েছে। তিনটি বাচ্চারও বিভিন্ন জায়গা পুড়ে গিয়েছে।’’ এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘সন্দীপ বাড়ি বাড়ি গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছন। প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে কাজে বেরোন। এ দিনও বেরোনোর আগে চা তৈরি করতে গিয়েছিলেন।’’
বিস্ফোরণের তীব্রতায় পাশের ঘরের টিনের ছাদের একাংশ উড়ে গিয়েছে। সিলিং ফ্যান দুমড়ে গিয়েছে। তবে সংলগ্ন ঘরগুলির আবাসিকেরা জখম হননি।