প্রতীকী ছবি।
কালীপুজো ও দীপাবলিতে যে কোনও ধরনের বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। আদালতের নির্দেশ যাতে যথাযথ ভাবে পালিত হয়, বাহিনীকে তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। শনিবার আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সে কালীপুজো নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিপি। বৈঠক শেষে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘কালীপুজোর রাতে প্রতিটি ডিভিশনে অতিরিক্ত বাহিনী রাখা হচ্ছে, যাতে আদালত এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ কঠোর ভাবে পালিত হয়।’’
গত বারও কোভিডের কারণে কালীপুজোয় সব রকম বাজির উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশের নজর এড়িয়ে এবং আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে শহরে মুহুর্মুহু বাজি ফেেটছিল বলে অভিযোগ। যার জেরে সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয় পুলিশকে। এ বার যাতে তেমন কিছু না ঘটে, তার জন্য আগাম কঠোর নজরদারি এবং পদক্ষেপ করার কথা জানিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। গত বছরের অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে বহুতল ও আবাসনগুলির উপরে। প্রতিটি থানাকে নিজেদের এলাকার সমস্ত আবাসন কমিটির সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করতে বলা হয়েছে। সেই কাজ শুরুও করেছে থানাগুলি। বাজি ফাটানোর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এলে তারা যাতে আবাসনে ঢুকতে বাধা না পায়, তা নিশ্চিত করতেও আলোচনা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, আবাসনের ছাদে বা চত্বরে বাজি ফাটালে আবাসন কমিটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, বাজির প্রবেশ আটকাতে এক সপ্তাহ আগে থেকেই শহরে ঢোকার ১৫টি জায়গায় পুলিশ-পিকেট বসানো হয়েছে। প্রতিটি পিকেটে দু’টি শিফটে চার জন করে পুলিশকর্মী থাকছেন। এ ছাড়া, শহরের ২৮টি জায়গায় চলছে নাকা-তল্লাশি। সেখানেও চার জন করে পুলিশকর্মী থাকছেন। বাজি বাজেয়াপ্ত করতে প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন তাঁরা। কালীপুজোর দিন ১৬ জন ডিসি-র প্রত্যেককে চার-পাঁচটি করে থানা এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) জানাচ্ছেন, দু’বেলা দু’টি বিশেষ দল বাজির বিরুদ্ধে শহর জুড়ে অভিযান চালাচ্ছে। কালীপুজোর দু’দিন ভাড়া করা ১১৫টি অটোয় এলাকায় এলাকায় ঘুরবে পুলিশ। শনিবার পর্যন্ত ২৩০০ কেজি বাজি আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত বার যে সব এলাকা থেকে বাজির দৌরাত্ম্যের অভিযোগ এসেছিল, সেখানে প্রচার ও নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, কালীপুজোর রাতে ও পরদিন বিভিন্ন হাসপাতালের ৩৫টি জায়গায় পুলিশ-পিকেট রাখা হচ্ছে। হাসপাতাল চত্বর-সহ আশপাশে কোথাও যাতে বাজি না ফাটে, তা দেখার দায়িত্ব পিকেটে থাকা পুলিশের।