—প্রতীকী চিত্র।
শহরের রাস্তায় চলন্ত গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়ার দূষণের মাত্রা পরিমাপ করতে পরিবহণ দফতরের একটি ‘রিমোট সেন্সিং ডিভাইস’ বা আরএসডি চালু ছিল। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে তা বন্ধ বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, দু’টি নতুন আরএসডি সম্প্রতি পরিবহণ দফতর হাতে পেলেও সেগুলি এখনও রাস্তায় নামানো যায়নি। এ দিকে এই নজরদারির অভাবে এক দিকে যেমন চলন্ত গাড়ি থেকে দূষণ বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ছে, তেমনই জরিমানা বাবদ সরকারের বিপুল রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলেও দাবি করছেন পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা।
জানা গিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে শহরের রাস্তায় কাজ করছে আরএসডি। মূলত চলন্ত গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় দূষণের মাত্রা ঠিক কতটা, তা পরিমাপ করতেই এই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে, সেটি চালু করিয়ে নির্গত ধোঁয়া পরীক্ষা করতেন পরিবহণ দফতরের কর্মীরা। বিধি ভঙ্গের ক্ষেত্রে জরিমানাও করা হত। গত তিন বছরে পরিবহণ দফতর এই পদ্ধতিতে জরিমানা বাবদ প্রায় ৯ কোটি টাকা আদায় করেছে।
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানান, ২০০৯ সালে কলকাতা হাই কোর্টে একটি গাড়ির দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় এবং চলন্ত অবস্থায় নির্গত ধোঁয়ায় দূষণের মাত্রায় তারতম্য রয়েছে বলে দাবি করে মামলা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই কলকাতা হাই কোর্ট শহরের জন্য চারটি
আরএসডি চালুর নির্দেশ দিয়েছিল। তবে মাত্র একটি যন্ত্র দিয়েই
শহরের রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা শুরু হয়। রেড রোড, ফোর্ট উইলিয়াম চত্বর, খিদিরপুর, ই এম বাইপাস-সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এই যন্ত্র নিয়ে পরিবহণ দফতরের কর্মীদের কাজ করতে দেখা যেত। সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়ার দূষণ মাপতে এই যন্ত্রের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই যন্ত্র বন্ধ রয়েছে। দিনের পর দিন এই নজরদারি বন্ধ থাকলে শহরের রাস্তায় দূষণ সৃষ্টিকারী গাড়ির দৌরাত্ম্য যে বাড়বে, এতে কোনও সন্দেহ নেই। সেক্ষেত্রে বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধির আশঙ্কাও বাড়বে।’’
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে দু’টি নতুন আরএসডি পেয়েছে পরিবহণ দফতর। সেই দু’টি যন্ত্রেরও ব্যবহার শুরু হয়নি। তবে এই বিষয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যান্ত্রিক কোনও গোলযোগ না থাকলে সাধারণত রাস্তায় নেমে আরএসডি কাজ করে।’’ নতুন দু’টি আরএসডি প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘নতুন মেশিন দু’টি পরীক্ষানিরীক্ষা-সহ মহড়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দ্রুত সেগুলি রাস্তায় নেমে কাজ শুরু করবে।’’