Union Budget 2024

জোর কম জলবায়ু বদলের দাওয়াইয়ে, উপকূল রক্ষাতেও

গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে টানা অতিবৃষ্টি হয়েছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয়েছে উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচলেও। যার জেরে পাহাড়ি এলাকায় বার বার ধস নেমেছে।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৫
Share:

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, সিকিমকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু জলবায়ু বদলের ক্ষতি ঠেকানোর কোনও জোরালো ঘোষণা মঙ্গলবারের বাজেটে শোনা যায়নি। পরিবেশবিদেরা বার বারই বলেছেন যে, অতিবৃষ্টির জেরে বন্যা, ধস ইত্যাদি বিপর্যয়ের পিছনে জলবায়ু বদলই দায়ী। উপকূলীয় এলাকায় বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়ের বিপদও। তাই শুধু ক্ষতিপূরণের টাকা ঘোষণা না করে, সামগ্রিক ভাবে জলবায়ু বদলের বিপর্যয়ে জোর দিলেই উপযুক্ত পদক্ষেপ হত বলে মনে করছেন তাঁরা।

Advertisement

গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমে টানা অতিবৃষ্টি হয়েছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হয়েছে উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচলেও। যার জেরে পাহাড়ি এলাকায় বার বার ধস নেমেছে। সরকারি হিসাবে, ২০২৩ সালে উত্তরাখণ্ডে ১১০০-রও বেশি ধসের ঘটনা ঘটেছে। মারা গিয়েছেন শতাধিক মানুষ। পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ক্ষতির পরে টাকা দেওয়া জরুরি ঠিকই। কিন্তু তার চেয়েও জরুরি বিপদ ঠেকানো। তার কোনও প্রতিফলন বাজেটে দেখা যায়নি। সুন্দরবনের মতো উপকূলীয় এলাকাগুলিও বিপন্ন। তা নিয়েও বাজেটে নতুন কিছু শোনা গেল না।’’ অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পাহাড়ি এলাকায় যে ভাবে অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ চলছে, তাতেও রাশ টানা প্রয়োজন।

পরিবেশবিদেরা বলছেন, জলবায়ু বদলের ফলে ঘন ঘন শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে, সমুদ্রের জলস্তর বাড়ছে, উপকূলীয় এলাকায় জল লবণাক্ত হয়ে পড়ছে। যার প্রভাব ব্যাপক হারে জনজীবনে পড়ছে, ক্ষতি হচ্ছে জীববৈচিত্রের। ইউনেস্কো হেরিটেজ তালিকাভুক্ত এবং পরিবেশগত ভাবে অতি স্পর্শকাতর সুন্দরবনে তার প্রভাব অত্যধিক। এই পরিস্থিতিতে উপকূলীয় পরিবেশ এবং জলবায়ু বদলের প্রভাব ঠেকানোর কাজ বাজেটে প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন ছিল।

Advertisement

জলবায়ু বদলের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে মাথায় রেখে কয়েকটি ঘোষণাও এ দিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেটে শোনা গিয়েছে। সৌরশক্তির উৎপাদনে উৎসাহ দানের জন্য সৌর প্যানেল এবং যন্ত্রাংশে কর ছাড়ের কথা জানিয়েছেন নির্মলা। পরমাণু শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও নতুন ঘোষণা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ছোট মাপের পরমাণু চুল্লি স্থাপনে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবে সরকার। এ ছাড়াও, ‘ভারত মডিউলার নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর’ এবং পরমাণু প্রযুক্তির নতুন গবেষণার ক্ষেত্রেও সরকার অংশীদার হবে। গৃহস্থ বাড়ির ছাদে সৌর প্যানেল বসিয়ে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্র যে প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল, তাকেও জোরালো করার কথা বলা হয়েছে। ওই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ১৪ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে ‘পাম্পড স্টোরেজ’ প্রকল্পেও জোর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন নির্মলা। জলবায়ুর বদল সহনে সক্ষম শস্যবীজ কৃষকদের দেওয়া হবে বলেও বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্বাতী বলছেন, ‘‘শিল্প ক্ষেত্রে সৌরশক্তি ব্যবহারের কথা উঠছে। সে দিকেও জোর দেওয়া প্রয়োজন। প্লাস্টিকের আমদানির উপরে কর বৃদ্ধি হলেও পরিবেশের উন্নয়ন হত। তবে ক্লাইমেট ট্যাক্সনমির কথা বলা হয়েছে। সেটা এক দিকে আশাব্যঞ্জক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement