ব্রেন ডেথ হওয়া, বছর পঞ্চাশের প্রৌঢ়ার দান করা অঙ্গে নতুন করে প্রাণ পেলেন চার জন। প্রতীকী ছবি।
ফের মরণোত্তর অঙ্গদান হল শহরে। ব্রেন ডেথ হওয়া, বছর পঞ্চাশের প্রৌঢ়ার দান করা অঙ্গে নতুন করে প্রাণ পেলেন চার জন। শনিবার সন্ধ্যায় ওই প্রৌঢ়ার দেহ থেকে অঙ্গ তোলার কাজ শেষ হয়েছে। রাত থেকে তা প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে এ শহরেরই তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা তপতী কুইল্যার গত ৬ জানুয়ারি আচমকাই শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, তাঁর হাত তুলতে সমস্যা হচ্ছিল। ওই দিনই প্রৌঢ়াকে আলিপুরের সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর মেয়ে রিয়া কুইল্যা ওই হাসপাতালের নার্স। সেখানেই ভর্তি করা হয় তপতীকে। পরীক্ষায় দেখা যায়, তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত। শুরু হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। সূত্রের খবর, চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে শারীরিক ভাবে স্থিতিশীল হচ্ছিলেন প্রৌঢ়া। গত ১৮ জানুয়ারি থেকে আচমকাই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। কোমায় চলে যান তিনি।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২০ জানুয়ারি দুপুরে চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন ওই প্রৌঢ়ার ব্রেন ডেথ হচ্ছে। রাতে নিশ্চিত হন চিকিৎসকেরা। ব্রেন ডেথ ঘোষণার পর পরই রিয়া সিদ্ধান্ত নেন অঙ্গদানের। তাঁকে সমর্থন জানান পরিজনেরাও। সেই মতো ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’-এর (রোটো) মাধ্যমে গ্রহীতার খোঁজ শুরু হয়। শনিবার দুপুরের মধ্যে স্থির হয় কোন হাসপাতাল, কোন অঙ্গ পাবে। জানা যাচ্ছে, তপতীর হৃৎপিণ্ড পেয়েছেন মেডিকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩২ বছরের এক যুবক। আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালের ৩২ ও ৩৯ বছরের দুই যুবক পেলেন কিডনি। আর যকৃৎ পেয়েছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের ৬৪বছরের এক প্রৌঢ়।
রিয়া বলেন, ‘‘মায়ের অঙ্গে অন্যেরা দ্বিতীয় বার বাঁচার সুযোগ পাবেন। এটাভেবেই আমি ও বাবা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ রোটো-র আধিকারিকদের কথায়, ‘‘সমাজের সকল স্তরের মানুষকে মরণোত্তর অঙ্গদান সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তবেই বহু রোগী নতুন জীবন পাবেন।’’