জীর্ণ বাড়ি ভাঙতে পুনর্বাসনে রাজি নন মেয়র

গত এপ্রিলে বিপজ্জনক বাড়ির স্থায়ী সমাধানে বিল্ডিং আইনে ৪১২এ ধারা যুক্ত হয়েছে। তার প্রয়োগ করতে পুরসভা যে ‘স্কিম’ (রূপরেখা) তৈরি করেছে, তাতে অবশ্য রয়েছে, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৫২
Share:

বিপর্যয়: এ ভাবেই ভেঙে পড়েছে রাজেন্দ্রলাল স্ট্রিটের বাড়িটির একাংশ। শুক্রবার। ছবি: দীক্ষা ভুঁইয়া

বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে নতুন করে গড়ার সময়ে বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের দায় নেবে না পুরসভা। শুক্রবার কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এ কথা জানাতেই ফের বিতর্ক পুর মহলে।

Advertisement

গত এপ্রিলে বিপজ্জনক বাড়ির স্থায়ী সমাধানে বিল্ডিং আইনে ৪১২এ ধারা যুক্ত হয়েছে। তার প্রয়োগ করতে পুরসভা যে ‘স্কিম’ (রূপরেখা) তৈরি করেছে, তাতে অবশ্য রয়েছে, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ওই স্কিমে আছে, বাড়ির মালিক রাজি না হলে টেন্ডারের মাধ্যমে যিনি ওই বাড়ি নির্মাণের বরাত পাবেন, পুনর্বাসনের ভার তাঁকেই নিতে হবে। পুরসভা তদারকি করবে।

ওই স্কিম অনুযায়ী পুরসভা বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু করেছে। এর মধ্যেই মেয়রের এই মন্তব্যে বিভ্রান্ত পুর ইঞ্জিনিয়ারেরাও। তাঁরা মনে করছেন, এমন সিদ্ধান্তে পুরো প্রক্রিয়াই ঝুলে যাবে। বিপজ্জনক বাড়িগুলিতে এমন বহু পরিবার আছে, যাদের থাকার বিকল্প জায়গা নেই। একটি বাড়ি তৈরি হতে যদি কমপক্ষে এক বছরও লাগে, তা হলে কোথায় থাকবেন তাঁরা? তার বেশি লাগলে তো চরম অসুবিধায় পড়বেন তাঁরা। পুরসভার স্কিমে তো পুনর্বাসনের কথা আছে। এবং তা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট নির্মাণ সংস্থাকে। এ ব্যাপারে মেয়রের মন্তব্যের প্রতিবাদ করার সাহসও কেউ দেখাননি।

Advertisement

গত কয়েক দিনে শহরে পরপর ভেঙে পড়েছে বিপজ্জনক বাড়ি। তালতলার কাছে একটি বাড়ি ভেঙে দু’জন মারাও যান। এ দিন পুরভবনে আইনের ওই নতুন ধারার প্রয়োগ নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেখানে পুর কমিশনার খলিল আহমেদ, পুলিশের এক ডেপুটি কমিশনার-সহ বিল্ডিং দফতরের আধিকারিকেরা ছিলেন। মেয়র জানান, এত দিন বিপজ্জনক বাড়িতে ছোট আকারের একটি নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হত। এ বার থেকে শহরের প্রতিটি বিপজ্জনক বাড়িতে বড় বড় ফ্লেক্স, ব্যানার, হোর্ডিং সাঁটানো হবে। ওই বাড়ির এবং এলাকার বাসিন্দা এবং পথচলতি মানুষ যাতে জানতে পারেন যে, বাড়িটি বিপজ্জনক। সেখান থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করা হবে বাসিন্দাদের।

কবে থেকে শুরু হবে এই হোর্ডিং? শোভনবাবু জানান, খুব শীঘ্রই। চার-পাঁচ হাজার হোর্ডিং, ফ্লেক্স তৈরি করতে দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে কবে? মেয়র জানান, সতর্ক করার পরে নোটিস দেওয়া হবে বাড়ি ছাড়তে। বাড়ি ‘কনডেমড’ বলে ঘোষিত হবে। তার পরেই মালিককে সুযোগ দেওয়া হবে তা নির্মাণের। তিনি রাজি না হলে টেন্ডার করে কোনও সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে।

আর বাড়ির বাসিন্দাদের থাকার জায়গা তো দিতে হবে নির্মাণ সংস্থাকেই? মেয়রের সাফ জবাব, ‘‘তা কেন? যিনি যাঁর মতো ব্যবস্থা করে নেবেন।’’ পুরসভা কোনও দায় নেবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement