চিঠির তালিকায় ছিল গত সোমবারের দুর্ঘটনাস্থল-সহ সাতটি জায়গার নাম। ফাইল চিত্র।
বাসন্তী হাইওয়ের খানাখন্দ সারাইয়ের জন্য গত পুজোর আগেই রাজ্য পূর্ত দফতরকে চিঠি দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। চিঠির সেই তালিকায় ছিল গত সোমবারের দুর্ঘটনাস্থল-সহ সাতটি জায়গার নাম। এমনটাই দাবি করেছে কলকাতা পুলিশ। ফলে প্রশ্ন উঠছে, প্রায় চার মাস পরেও কেন সেই রাস্তায় খানাখন্দ রয়ে গেল? তবে কি দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরের গাফিলতির কারণেই সোমবারের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডের তরুণ সার্জেন্ট শশিভূষণ মিঞ্জের?
বাসন্তী হাইওয়ের সেই দুর্ঘটনাস্থল, কাঁটাতলা এবং বানতলার কাছে রাস্তার গর্ত বোজানোর কাজে অবশেষে মঙ্গলবার হাত দিয়েছে পূর্ত দফতর। শশিভূষণবাবু যেখানে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন, সেই জায়গা ছাড়াও আরও যে ছ’টি জায়গার নাম কলকাতা পুলিশের দেওয়া চিঠিতে ছিল, সেগুলি হল বানতলা বাজার, জলপথ, বামনঘাটা বাজার, কেএলসি এক নম্বর গেট, ভোজেরহাট এবং আরুপোতা। সোমবারের দুর্ঘটনাস্থলের গর্ত বোজানো ছাড়া ওই রাস্তায় অন্য কোথাও এখনও মেরামতির কাজ হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
বাসন্তী হাইওয়ে ছাড়াও শহরের কোন কোন রাস্তা বেহাল অবস্থায় রয়েছে, সোমবারের দুর্ঘটনার পরে ফের সে দিকে নজর দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। শহরের রাস্তার অবস্থা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের কাছে জানতে চেয়েছে লালবাজার। তাঁদের এলাকার ছোট-বড় অলিগলির কোন রাস্তায় কী ধরনের মেরামতি প্রয়োজন তা-ও জানাতে বলা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ট্র্যাফিক গার্ডগুলি ওই রাস্তার তালিকা পাঠালেই ফের তা পূর্ত দফতরকে পাঠানো হবে।
কিন্তু রাস্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরকে চিঠি দিয়েও যখন পরিস্থিতি বদলায় না, তখন এ বারেও আদৌ কাজ কতটা হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে পুলিশের অন্দরে। পূর্ত দফতরের দাবি, ওই চিঠি পাওয়ার পরে বিভিন্ন রাস্তা মেরামত করা হয়েছিল। তাদের যুক্তি, গত বছর ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় তার মধ্যেই রাস্তার কাজ করতে হয়েছিল। ফলে বৃষ্টির পরে রাস্তা ফের খানাখন্দে ভরে যায়।
পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভা অবশ্য জানাচ্ছে, গত বছর বৃষ্টি বেশি হওয়ায় শুধুমাত্র তাপ্পি মারা হয়েছে। ফলে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ভেঙেচুরে দুর্বিষহ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাসন্তী হাইওয়েতে প্যাচ ওয়ার্ক নয়, যথাযথ মেরামতি হয়েছিল বলেই দাবি করছেন পূর্ত (রাস্তা) দফতরের এক আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘সেই সময়ে পুলিশ জানানোর পরে বাসন্তী হাইওয়ের একাধিক জায়গায় মেরামতির কাজ হয়েছে। কিছু জায়গায় এখন খানাখন্দ রয়েছে, দ্রুত সে সব ঠিক করা হবে।’’ ওই রাস্তার চিহ্নিত অংশে কাজের পরেও কেন গর্ত থাকল? তাঁর উত্তর, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। তবে যতটা যা বলা হয়েছিল, সেই কাজ হয়েছে। গাফিলতির কোনও প্রশ্ন নেই।’’