প্রতীকী ছবি।
এমবিএ তৃতীয় বর্ষের শেষ পরীক্ষা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু সকাল হয়ে গেলেও যুবক দরজা না খোলায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন দিদি। তার পরেও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে এনে দরজা ভাঙা হয়। দেখা যায়, নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই যুবক। এর পরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসার অপেক্ষা না করে তড়িঘড়ি তাঁকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন কৌস্তুভকালী ভৌমিক (২৬) নামে ওই যুবককে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে, হরিদেবপুর থানা এলাকায়।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, কৌস্তুভকালী আদতে পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা। গত মে থেকেই হরিদেবপুর থানা এলাকার বিদ্যাসাগর সরণিতে দিদি নন্দিনী ভৌমিক ও জামাইবাবুর ফ্ল্যাটে থাকছিলেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ-র তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন তিনি। বছর কয়েক আগে পড়াশোনার জন্য এ শহরে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন। গত বছর থেকে করোনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় ভাড়াবাড়ি ছেড়ে মেদিনীপুরে ফিরে যান। তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার জন্য কয়েক মাস আগে শহরে এসে দিদির কাছে থাকছিলেন যুবক। তাঁর দিদি এসএসকেএম হাসপাতালের নার্স এবং জামাইবাবু কলকাতা পুলিশে কর্মরত।
এ দিন সকাল হয়ে গেলেও ভাই ঘুম থেকে না ওঠায় দিদি দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। বেশ কয়েক বার ধাক্কা দিয়েও সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের খবর দেন তিনি। তাঁরাই দরজা ভেঙে কৌস্তুভকালীকে গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে ফ্যান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। দ্রুত তাঁকে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন কৌস্তুভ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর পেয়েছিলেন। অন্যান্য পরীক্ষাতেও সাফল্যের সঙ্গেই পাশ করেছিলেন যুবক। বছরখানেক আগে কলকাতা পুলিশের চাকরি পেলেও সেই কাজে যোগ দেননি তিনি। বরাবরই উচ্চ পদে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন যুবক। তাঁর এমন পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না মৃতের আত্মীয় এবং প্রতিবেশীরা।
ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার না হলেও পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ওই যুবকের কোনও মানসিক অবসাদ ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।