বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ঢোকা ও বেরোনোর জন্য এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। ফাইল ছবি।
কেন্দ্র বনাম রাজ্যের তরজায় আটকে গিয়েছে হাওড়া স্টেশনে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের জন্য প্ল্যাটফর্ম আধুনিকীকরণের প্রকল্প। রেলের এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। রেলের বক্তব্য, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ঢোকা ও বেরোনোর জন্য এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। ওই প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে তিন গুণ বাড়ানো হবে। সেই কাজ চলাকালীন হাওড়ার বঙ্কিম সেতুর অর্ধেক অংশে যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। রেলেরদাবি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় অনুমতি পেতে কেএমডিএ-র কাছে মাস ছয়েক আগেই আবেদন করেছিল তারা। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তার উত্তর না আসায় প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ থমকে গিয়েছে বলে অভিযোগরেলের। এ বিষয়ে কেএমডিএ-র বক্তব্য, বঙ্কিম সেতুর মতো গুরুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধ রাখলে তীব্র যানজট তৈরি হবে। তাই গোটা বিষয়টি নবান্নে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলেই রেলকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো বিশেষ ট্রেন যাতে হাওড়া স্টেশনে খুব সহজেই ঢুকতে ও বেরোতে পারে, তার জন্য এক নম্বর প্ল্যাটফর্মটিও বিশেষ ভাবে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। সেই মতো ‘গতিশক্তি’ নামের ওই প্রকল্পের জন্য ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দওকরা হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ১৮০ মিটার। বন্দে ভারতের জন্য সেই দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে করা হবে ৬৩০ মিটার। রেলের এই ‘গতিশক্তি’প্রকল্পের চিফ প্রজেক্ট ম্যানেজার বিনোদ পাসওয়ান বলেন, ‘‘এই প্ল্যাটফর্মটি এমন ভাবে তৈরি করা হবে, যাতে যাত্রীদের জন্য সমস্ত রকম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সেখানে থাকে। দৈর্ঘ্য বাড়াতেগিয়ে দেখা যাচ্ছে, স্টেশনের দিল্লি-প্রান্তে ওই প্ল্যাটফর্ম বঙ্কিম সেতু ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু, বঙ্কিম সেতুর ওই প্রান্তে রেলের বেশ কিছু বাতিল স্তম্ভরয়েছে। সেগুলি তুলতে গেলে ওই সেতুর নীচে ও উপরে নানা যন্ত্রাংশ বসাতে হবে। তার জন্য সেতুর একাংশে যান চলাচল বন্ধ রাখা দরকার।’’
চিফ প্রজেক্ট ম্যানেজার জানান, বঙ্কিম সেতুর অর্ধেক অংশে ২৫ দিনের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে রেল কেএমডিএ-কে চিঠি দিয়েছে।তারাই ওই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ করে। কিন্তু, গত ছ’মাস ধরে অপেক্ষা করার পরেও কোনও উত্তর মেলেনি। যার ফলে প্রকল্পটাই আটকে গিয়েছে।এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কেএমডিএ-র হাওড়া বিভাগের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘এর আগেও বঙ্কিম সেতু মেরামত করার জন্য সেতুর অর্ধেকটা বন্ধ করতে চেয়ে খোদ কেএমডিএ নবান্নের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু, সেই অনুমতি মেলেনি। এখন রেল চাইলে অনুমতি পাবে কী করে?’’
ওই কর্তা বলেন, ‘‘বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরাসরি নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলেই রেল কাজ শুরু করতে পারবে। আসলে বঙ্কিম সেতুর মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অর্ধেকটা বন্ধ করে কাজ করলে যানজট হবেই। তাই রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করায় সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।’’