অবশেষে ১০২ বছরে প্রতিষ্ঠা দিবসের স্বীকৃতি পেল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। ফাইল ছবি।
সেঞ্চুরি পেরোলেও মতান্তরের কারণে কোনও দিন পালিত হয়নি জন্মদিন। অবশেষে ১০২ বছরে প্রতিষ্ঠা দিবসের স্বীকৃতি পেল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। এ বার থেকে প্রতি নববর্ষে পালিত হবে ওই মেডিক্যাল কলেজের জন্মদিন।
শনিবার প্রথম পালিত জন্মদিনে ছিলেন কাশীপুর রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী দিব্যানন্দ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী-সহ অন্যরা। কলেজের প্রাক্তনী সংগঠনের তরফে চিকিৎসক পীতবরণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি পরতে স্বদেশি ইতিহাসের ছোঁঁয়া। অন্য মেডিক্যাল কলেজের মতো এখানে লাল রঙের ব্রিটিশ স্থাপত্য নেই।’’
১৯২০ সালে দেশীয় মেডিক্যাল কলেজ তৈরি করতে চেয়েছিলেন স্বদেশিরা। অসহযোগ আন্দোলনের তহবিল থেকে ১৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে ১৯২১ সালের ১৪ এপ্রিল (১৩২৮ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখ) ১১ নম্বর ওয়েলিংটন স্ট্রিটের ফোর্ব’স ম্যানসনে স্থাপিত হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট। মূল কারিগর ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ। কিছু দিন পরে সেটি মানিকতলায় স্থানান্তরিত হয়। কলকাতার মেয়র চিত্তরঞ্জন ১৯২৫ সালে হাসপাতাল ভবন তৈরির জন্য জমি দান করেন। চিত্তরঞ্জনের মৃত্যুর পরে ১৯২৭ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মেয়র যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত। নাম হয় চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল।
কয়েক বছর পরে কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার থেকে জমি কিনে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হয়। ১৯৪৮-এ ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট তথা চিত্তরঞ্জন হাসপাতালকে মিলিয়ে দেওয়া হয় বৌবাজারের ক্যালকাটা মেডিক্যাল স্কুলের সঙ্গে। নাম হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। ১৯ বছর পরে সরকার সেটি অধিগ্রহণ করে। ১৯৭৬ সালের ১১ জুন জাতীয়করণ হয়। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়, ১৩২৮ বঙ্গাব্দের ১ বৈশাখই প্রতিষ্ঠা দিবস। স্বীকৃতি মিলেছে স্বাস্থ্য দফতরেরও। অধ্যক্ষ অজয় রায় বলেন, ‘‘স্বদেশিদের তৈরি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্মদিন বাংলা ক্যালেন্ডার মেনেই হওয়া উচিত।’’