সোমবার রাত থেকেই বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
রাত পোহালেই শেষ শারদোৎসব! সিঁদুর খেলে মিষ্টিমুখে ঘরের মেয়েকে বিদায় জানানোর পালা শুরু হবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই। বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো থেকে ছোট ছোট প্রতিমা নিরঞ্জন হতে পারে দিনভর। সেই ভাবনা থেকেই সোমবার রাত থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ ও শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
কলকাতার খিদিরপুরের দহিঘাট, বাবুঘাট, আহিরীটোলা ঘাট, কুমোরটুলি, বাজাকদমতলা ঘাটে বেশি করে প্রস্তুতি রাখা হবে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। ক্রেন, লাইফবোট-সহ পর্যাপ্ত আলো ও বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান বলছে এই ঘাটগুলিতেই সবচেয়ে বেশি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। তাই কলকাতা পুরসভার তরফে বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে এই ঘাটগুলিতেই বেশি নজরদারি করতে। বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে কলকাতা পুরসভাকে জানানো হয়েছে, এ বার প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় গঙ্গায় নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হবে তাদের তরফে। কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি, তারা এ বার ৫০টি লাইফবোট নামাবে কলকাতার গঙ্গায়।
গত সেপ্টেম্বর মাসে বিসর্জন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন কলকাতা পুরসভা এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছিল, উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতায় যতগুলি ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন হয় সেই সব ঘাটকে তৈরি করার দায়িত্বে থাকবে কলকাতা পুরসভা। আর জলপথে সেই কাজে কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি, নজরদারি চালাবেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই পরিকল্পনামাফিক হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করা হবে।
প্রতিমা গঙ্গার জলে পড়ার পরেই যাতে ক্রেন মারফত তা দ্রুত তুলে ফেলা সম্ভব হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কারণ প্রতিমা নির্মাণে ব্যবহার হওয়া বিভিন্ন পদার্থ থেকে গঙ্গার জলে দূষণ হতে পারে। সেই দূষণ রোধের দায়িত্ব থাকছে পুরসভার কাঁধেই। একই সঙ্গে বিসর্জনের কাজে কর্মরত কোনও ব্যক্তির যাতে প্রাণহানির আশঙ্কা না থাকে, সে বিষয়ে বিশেষ ভাবে সজাগ থাকতে হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে অক্টোবর মাসের পুর অধিবেশনে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বড় বড় ঘাটগুলি ছাড়াও কলকাতা শহরে থাকা বিভিন্ন পুষ্করিনীতেও প্রতিমা বিসর্জন করা যাবে। তার জন্য যে যে পরিকাঠামো প্রয়োজন হবে, তা সবই করে দেবে কলকাতা পুরসভা। সেই মতো কলকাতা পুরসভা এলাকায় থাকা পুষ্করিনীতেও বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলেই খবর।