—নিজস্ব চিত্র।
ত্রিফলা আলোর স্তম্ভের মাঝের পাল্লাটি খোলা ছিল। উন্মুক্ত ছিল বিদ্যুতের তারগুলি। জমা জল ঠেলে ফেরার সময়ে পিছলে পড়ে যাচ্ছিল কিশোর। নিজেকে সামলাতে গিয়েই হাত চলে যায় ওই অংশে। ঘটনাস্থলেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল তার।
সোমবার এই দুর্ঘটনা ঘটেছে ভবানীপুরের রমেশ মিত্র রোডে। বছর চোদ্দোর ওই কিশোরের নাম যশ বেঙ্গানি। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যায় টিউশন থেকে ফেরার সময়ে লেডিস পার্কের সামনে ঘটনাটি ঘটে। হাসপাতালে যশকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সোমবারের প্রবল বৃষ্টিতে ওই রাস্তায় তখন হাঁটুজল। ওই এলাকারই বাসিন্দা গৌতম রাউল নামের এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘পিঠে ব্যাগ নিয়ে জল ঠেলে বাড়ি ফিরছিল ছেলেটি। হঠাৎই ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাচ্ছিল। তখনই হাত দিয়ে ফেলে পাশেই ত্রিফলা আলের স্তম্ভটিতে। তার পরে কিছু বোঝার আগে জমা জলে সে তলিয়ে যায় আমাদের চোখের সামনেই।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ খবর দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে বাঁশ দিয়ে টেনে উদ্ধার করে ওই কিশোরকে। ততক্ষণে অবশ্য মৃত্যু হয়েছে তার।
কেন এমন বিপজ্জনক ভাবে খোলা ছিল স্তম্ভের পাল্লাটি? মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘এমন কিছুই জানি না। বিষয়টি আপনারা ইচ্ছে মতো ব্যাখ্যা করতে পারেন।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় অনেক উন্নয়ন হলেও জল জমার সমস্যা মেটেনি। কারণ, নিকাশি ব্যবস্থা যথাযথ নয়। এ দিনের বৃষ্টিতেও এলাকায় অধিকাংশ বাড়ির বারান্দা উপচে জল ঢুকে গিয়েছে ঘরে। এ ছাড়া, গঙ্গায় জোয়ার এলেই প্রায় ভেসে যায় এলাকা। পুরসভায় দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সমাধান হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের।
এলাকার কাউন্সিলর সন্দীপরঞ্জন বক্সী বলেন, ‘‘এই এলাকায় একটি পাইপলাইন রয়েছে, যেটি গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। ওই পাইপ দিয়ে বৃষ্টির জল গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। বর্ষার সময়ে গঙ্গায় এমনিই জল বেড়ে যায়। ফলে বৃষ্টি বেশি হলে জমা জল নামতে দেরি হয়। এ দিনও একই কারণে জল নামতে দেরি হয়েছে।’’ সন্দীপবাবু জানান, দ্রুত জল নামার জন্য বিকল্প কোনও নিকাশি ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা নিয়ে পুরসভায় জানানো হয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।