অবশেষে ‘সার্চ ওয়ারেন্ট’ নিয়ে সল্টলেকের সিএল ব্লকের একটি আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান থেকে শনিবার এক কিশোরীকে উদ্ধার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, আগে তিন বার ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে বাধা পায় তাঁরা। শুক্রবার বিধাননগর আদালত থেকে ‘সার্চ ওয়ারেন্ট’ বের করে ওই প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে মুম্বইয়ের এক কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। ধরা হয় প্রতিষ্ঠানের এক সদস্যকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুম্বইবাসী ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে উদ্ধার করা হলেও, আর কাউকে এ দিন উদ্ধার করা যায়নি। অথচ উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শিশুকল্যাণ সমিতি সূত্রে খবর, ২৩ জুন সমিতির তরফে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করা হয়। ৩ জুলাই পুলিশকে লিখিত ভাবে জানানো হয় সেখানে ৭-৮ জন নাবালিকাকে দেখা গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রতিষ্ঠানে যায় ১৯ জুলাই। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ ও শিশুকল্যাণ সমিতির গড়িমসির সুযোগে ওই সময়ে বাকি নাবালিকাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের অন্যতম কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ দাসকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তিন মাস আগেই দত্তাবাদের একটি পরিবার পুলিশকে অভিযোগে জানায়, ওই প্রতিষ্ঠান তাঁদের মেয়েকে জোর করে আটকে রেখে বাইরে পাচার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সেই কিশোরী নিজে এই অভিযোগ অস্বীকার করায় তখন তদন্ত এগোতে পারেনি পুলিশ। পরে রাজ্যের শিশু, নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার কাছে সরাসরি ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। মন্ত্রী শিশুকল্যাণ সমিতিকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত করতে বললে, সমিতি তদন্ত শুরু করে। সেই তদন্তে গিয়েই ১৯ জুলাই মুম্বইয়ের ওই কিশোরী-সহ আরও সাত-আট জন নাবালিকার খোঁজ পাওয়া যায়।
সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, সমিতির এক মহিলা সদস্যকে ওই প্রতিষ্ঠানের তিন তলায় উঠতে বাধা দেওয়া হলেও, তিনি কোনও ভাবে ওই নাবালিকাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। তখনই তিনি জানতে পারেন নাবালিকাদের এনে তাদের আত্ম্যাধিক পাঠ দেওয়ার নামে ‘মগজ ধোলাই’ করা হত। তিন তলা থেকে তাদের নামতে দেওয়া হত না। এমনকী তাদের জানালা খোলার অধিকারও ছিল না। সমিতির দাবি, ওই প্রতিষ্ঠান তাদের কোনও আইনি কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ দিন সমিতির চেয়ারপার্সন অরবিন্দ দাশগুপ্ত জানান, এক কিশোরীকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। আর কাউকে পাওয়া যায়নি।