ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস অবিলম্বে খোলার দাবি জানিয়ে চলেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। কিন্তু শিক্ষকদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতির বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে পুজোর আগে ক্যাম্পাস খোলা ঠিক হবে না। শিক্ষকদের অনেকে এ-ও মনে করছেন, ক্যাম্পাস যদি পুজোর পরে খোলা হয়, তা হলে তখন প্রথম দফায় শুধুমাত্র চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে আনা হোক। এর পরে ধাপে ধাপে ক্যাম্পাস খোলার প্রক্রিয়া চলুক। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে। সেই সমীক্ষায় এই সব তথ্য উঠে এসেছে।
ওই সমীক্ষায় অধিকাংশই জানিয়েছেন, যেহেতু লোকাল ট্রেন এবং অন্যান্য যাতায়াত ব্যবস্থা এখনও স্বাভাবিক নয়, তাই ক্যাম্পাস এখনই খুললে যাতায়াতের ক্ষেত্রে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়া— সকলেই অসুবিধায় পড়বেন। সমীক্ষায় সব শিক্ষকেরই মত, ক্লাস করতে এলে পড়ুয়াদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। কেউই মাস্ক ছাড়া ক্লাসে আসার অনুমতি পাবেন না। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আরও অভিযোগ, ক্যাম্পাসে যে সব পড়ুয়াকে এখন দেখা যাচ্ছে, তাঁরা অনেকেই মাস্কহীন অবস্থায় থাকছেন। অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা জানিয়েছেন, ক্লাস শুরুর কথা হলে পড়ুয়াদের সঙ্গে তাঁদেরও আগে থেকে প্রতিষেধক নেওয়া জরুরি। কয়েক জন আবার জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুললেও শারীরিক কারণে তাঁরা এখনই ক্লাস নিতে পারবেন না।
এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, যে সব গবেষক প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের ক্যাম্পাসে আসতে দেওয়া হোক বলেই মত দিয়েছেন অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় গবেষণা ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বার বারই বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার জন্য এবং ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্লাসঘর, পরীক্ষাগারের অবস্থা ভাল নয়। সেগুলি এখনই খুলতে হলে তা ব্যবহারযোগ্য করতে মেরামত জরুরি। সেই কারণে সব শিক্ষাকর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা জরুরি। হস্টেল খোলার ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অবশ্যই প্রয়োজন বলে মত উঠে এসেছে সমীক্ষায়।
মঙ্গলবার ক্যাম্পাস খোলা নিয়ে আবার সব পক্ষের বৈঠক হয়। আলোচনায় উঠে আসে, শিক্ষা দফতর, পড়ুয়া, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিন। পড়ুয়াদের একাংশ বেশ কয়েক দিন ধরে এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি জানিয়ে আসছেন। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে জানিয়েছেন। এ দিনের বৈঠকে আরও উঠে আসে, উচ্চ শিক্ষা দফতর পড়ুয়া, গবেষকদের প্রতিষেধক দেওয়ার যে কথা জানিয়েছে, সেই ব্যবস্থা কর্মসমিতির তৈরি কমিটি দেখুক। এ ছাড়াও, ক্যাম্পাসের পরিকাঠামো ক্লাস করার যোগ্য করে তোলার প্রক্রিয়া নিয়ে সব পক্ষকে নিয়মিত জানানোর কথাও বলা হয় বৈঠকে।