নির্ভুল ফল প্রকাশের দাবিতে পড়ুয়াদের মিছিল। সোমবার, কলেজ স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় বহু ছাত্রছাত্রীর ফলাফল অসম্পূর্ণ। এমন অভিযোগে ‘ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিটি’ সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অভিযান করল। আন্দোলনকারীদের দাবি, কর্তৃপক্ষ এ দিন জানিয়েছেন, কলেজগুলির কাছে ২১ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত নির্ভুল ফল চাওয়া হবে। ওই ফল জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করা যায় কি না, সেটাও দেখবেন বলে কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছেন।
এ বার সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিয়েছিলেন এক লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী। ফল প্রকাশের পরে অভিযোগ উঠেছে, কোনও পরীক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে, কারও বা ফল ‘নট ফাউন্ড’, কারও আবার ফল শূন্য এসেছে। এর সঙ্গে শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ, ফকিরচাঁদ কলেজ-সহ কিছু কলেজের পড়ুয়াদের চূড়ান্ত সিমেস্টারের ফল প্রকাশ হয়নি। এই সব সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে ও দ্বারভাঙা ভবনের সামনে এ দিন বিক্ষোভ দেখায় ওই সংগঠন। পরে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকে কথা বলা হয়।
সংগঠনের পক্ষে অনীক দে এ দিন জানালেন, কলেজগুলিকে ২১ জানুয়ারির মধ্যে সমস্ত নির্ভুল ফল বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে হবে। ওই ফল জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করা যায় কি না, সেটাও দেখবেন বলে কর্তৃপক্ষ এ দিন তাঁদের জানিয়েছেন। ষষ্ঠ সিমেস্টারের যে সমস্ত ফল এখনও প্রকাশিত হয়নি, তা প্রকাশ করার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ, ফকিরচাঁদ কলেজের বিশেষ সমস্যাকে দ্রুত সমাধান করার দাবিও জানানো হয়। যে সমস্ত পড়ুয়া স্নাতকোত্তরে এখনও ভর্তি হতে পারেননি, তাঁদের ভর্তির সময়সীমা বাড়ানোর দাবিও জানানো হয়েছে।
অনীক বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি না মানেন, তা হলে ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ আন্দোলনের দিকে আমরা যাব।’’
সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার জন্য এ বার পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরণ করতে হয়নি। অথচ ২০১২ সাল থেকে যত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার্থী ছিলেন, সকলেই এ বার পরীক্ষা দিয়েছিলেন। পরীক্ষার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজগুলির উপরে দিয়েছিলেন। চূড়ান্ত বর্ষ এবং চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার মতোই পরীক্ষার নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টালে কলেজগুলিকে আপলোড করতে হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলির বহু অধ্যক্ষের অভিযোগ, পরীক্ষার্থীদের যে তালিকা (চেক লিস্ট) বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়েছিল, তার সঙ্গে নম্বর তোলার তালিকার (অ্যাওয়ার্ড লিস্ট) অনেক ফারাক ছিল। ওই তালিকায় বহু পরীক্ষার্থীর নাম ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় শেষ পর্যায়ে প্রচুর সংযোজন করে আবার অ্যাওয়ার্ড লিস্ট পাঠিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব ভুল সংশোধন করা যায়নি। এমনকি সব নম্বর তোলা সম্ভবও হয়নি। এক অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘পরীক্ষার ফর্ম ফিল আপ না হওয়ায় আসল সমস্যা হয়েছে। মার্চে আবার পরীক্ষা হলে পরীক্ষার্থীদের ফর্ম ফিল আপ না করানো হলে, সমস্যা একই থাকবে।’’
পুরো বিষয়টি নিয়ে সহ উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায় এবং পরীক্ষা নিয়ামক জয়িতা দত্তগুপ্তকে ফোন এবং মেসেজ করেও কথা বলা যায়নি।