নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে স্কুলে শাস্তি দেওয়ার নামে অপর এক ছাত্রের প্রস্রাব খেতে বাধ্য করার ঘটনায় পুলিশকে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু অভিযোগ, দশ দিন পেরিয়ে গেলেও দমদম পুলিশ এখনও অভিযোগ দায়ের করেনি।
আদালত সূত্রের খবর, গত অগস্ট মাসে দমদমের একটি স্কুলের এক ছাত্র নিজের জলের বোতল খুঁজতে গিয়ে ক্লাসের বাইরে সেটি কুড়িয়ে পায়। সে দেখে, তাতে কেউ প্রস্রাব করে রেখেছে। বিষয়টি সে দুই শিক্ষককে জানায়। অভিযোগ, কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই ওই দুই শিক্ষক নবম শ্রেণির বি সেকশনে গিয়ে দুই ছাত্রকে এই ঘটনায় ‘অপরাধী’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। কারণ, ওই দুই ছাত্র নাকি ক্লাসে ‘দুষ্টু ছেলে’ হিসেবে পরিচিত। শিক্ষকদের কাছে ওই দুই ছাত্র অবশ্য দাবি করেছিল, তারা কাজটি করেনি। কিন্তু ওই দুই শিক্ষক তা শোনেননি।
অভিযোগ, এর পরে ওই দুই ছাত্রকে পরস্পরের প্রস্রাব পান করতে বাধ্য করা হয়। সেখানেই অবশ্য শাস্তি শেষ হয়নি। দুই ছাত্র তা করতে রাজি না হওয়ায় স্কুল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। আরও অভিযোগ, এই শাস্তির পাশাপাশি এক ছাত্রের গোপনাঙ্গে আঘাতও করেন ওই দুই শিক্ষক।
এই ঘটনার কথা ভয়ে দুই ছাত্র প্রথমে বাড়িতে জানায়নি। কিন্তু পরে এক জন অসুস্থ বোধ করায় নিজের মাকে সে সব খুলে বলে। ওই ছাত্রের মা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সেখান থেকে কোনও সুরাহা না পেয়ে ওই স্কুলেরই এক শিক্ষককে পুরো বিষয়টি জানান তিনি।
এর পরে ওই শিক্ষকই বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দফতর, ডিআই থেকে শুরু করে ম্যানেজিং কমিটির নজরে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ না হওয়ায় দ্বারস্থ হন আদালতের। ওই শিক্ষকের আইনজীবী সব্যসাচী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষককে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা আদালতকে বিষয়টি জানিয়ে পিটিশন দায়ের করি। তার ভিত্তিতে ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দমদম থানার পুলিশকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অভিযোগ দায়ের করে বিষয়টির তদন্ত করতে বলেন।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশের পরেও দশ দিন পেরিয়ে গেল। অথচ, দমদম থানা কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন, সেটাই আশ্চর্যের!