—প্রতীকী চিত্র।
রাজ্যে ডেঙ্গির দাপট ক্রমশ বাড়ছে। নিত্যদিনই আসছে মৃত্যুর খবর। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের এলাকায় মশার বংশ রুখতে সক্রিয় হচ্ছে রাজ্য জ়ু অথরিটি। সংস্থার সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব জানিয়েছেন, আলিপুর চিড়িয়াখানা-সহ রাজ্যে যে ছ’টি চিড়িয়াখানা রয়েছে সেগুলির জলাশয়ে অবিলম্বে গাপ্পি ও কই মাছের চারা ছাড়তে বলা হয়েছে। কারণ, ওই মাছেরা মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে। বুধবারই এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছেন সদস্য-সচিব।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, রাজ্যে আলিপুর ছাড়াও শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি, ঝাড়গ্রাম, বর্ধমানের রমনাবাগান, আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ খয়েরবাড়ি এবং কোচবিহারের রসিক বিল চিড়িয়াখানার জলাশয়গুলিতে মশা বংশবৃদ্ধি করতে পারে বলে আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই আলিপুর চিড়িয়াখানায় দর্শকদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। তাই ওই জলে মশা জন্মালে ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়বে।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, অনেক সময়ে বড় পুকুর ছাড়াও বাঘ, সিংহ, কুমিরের ছোট পুকুর থাকে। তার বাইরে অন্যান্য পশুপাখির ঘরেও জলের চৌবাচ্চা রাখা হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মূল পুকুরের পাশাপাশি ছোট ছোট পুকুরেও মাছ ছাড়তে হবে। বিভিন্ন খাঁচার মধ্যে থাকা জলের পাত্র বা চৌবাচ্চা যাতে নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় সে দিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ইতিমধ্যেই তো ওই জলাশয়গুলিতে মশা বংশবৃদ্ধি করে ফেলতে পারে। তা হলে এখন নতুন করে মাছ ছেড়ে লাভ কী?
চিড়িয়াখানার কর্তাদের দাবি, সাধারণত জলাশয়গুলিতে মাছ থাকে। তবে মশাবাহিত রোগের পরিস্থিতি যে ভাবে ঘোরালো হচ্ছে, তাতে গাপ্পি-কইয়ের মতো মাছের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রয়োজন আছে। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলেন, ‘‘বড় পুকুরে মাছ তো আছেই। তা ছাড়া সেটায় গঙ্গার জল ঢোকে-বেরোয়। ফলে জল জমে থাকে না। বাঘ, সিংহ, শিম্পাঞ্জির জলের জায়গায় তেলাপিয়া-সহ কিছু মাছও ছাড়া আছে। তবে নির্দেশ মেনে গাপ্পি, কইও ছাড়া হবে।’’ আলিপুর-সহ বেশির ভাগ চিড়িয়াখানায় নিয়মিত জমা জল সাফ করা হয় বলেও সূত্রের দাবি।
মশা মারতে ‘কামান দাগতেও’ নিষেধ করেছেন সদস্য-সচিব। জ়ু অথরিটির এক কর্তা জানান, অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন পুর এলাকায় ব্লিচিং ছড়ানো, ধোঁয়া দেওয়া বা রাসায়নিক ব্যবহার করতে দেখা যায়। কিন্তু চিড়িয়াখানার মধ্যে ওই সব পন্থা নিষিদ্ধ করেছেন সদস্য-সচিব। কারণ ওই ধোঁয়া, রাসায়নিক ব্যবহার করলে চিড়িয়াখানার পশুপাখি এবং জীববৈচিত্রের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে মশার বংশ নির্মূল করতে বলা হয়েছে।