ফাইল চিত্র।
ভুয়ো শিবিরের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মে আরও কড়াকড়ি করছে রাজ্য প্রশাসন। এত দিন একটি শিবির করার ক্ষেত্রে নিয়মে যে ছাড় পাওয়া যেত, এ বার থেকে আর তা মিলবে না। এর পাশাপাশি, প্রতিষেধক পাওয়ার পরে কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, পুর প্রশাসনের তরফে সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, করোনার কোনও প্রতিষেধকই খোলা বাজারে মেলে না। এত দিন কোনও বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠন প্রতিষেধক শিবির করতে চাইলে তাদের বেসরকারি বা সরকারি হাসপাতাল অথবা পুর প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে হত। কত জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হবে, সেই সংক্রান্ত তথ্য জানিয়ে শিবির করার মতো পরিকাঠামো যে রয়েছে, তার প্রমাণ দিতে হত। সেই প্রমাণ গৃহীত হলে স্থানীয় থানাকে বিষয়টি জানিয়ে রাখতে বলে অনুমতি দেওয়া হত শিবিরের। এর পরেই টাকা জমা দিতে হত ওই সংস্থাকে।
কিন্তু শুক্রবার শিবির করার জন্য ছুটে বেড়ানো এক ব্যক্তির অভিজ্ঞতা অন্য রকম। ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে গেলে তাঁকে বলা হয়, ১২৭ জনের জন্য আগাম ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৩০০ টাকা জমা করতে হবে। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে দেওয়ার পরে জানানো হয়, আগে পুর প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। পুরসভার দ্বারস্থ হলে তাঁকে জানানো হয়, অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে চিঠি দিতে হবে। সেই চিঠি দেওয়ার পরে ‘কন্টেন্ট নট ভেরিফায়েড’ জানিয়ে বলা হয়, যে হাসপাতালের সাহায্যে শিবির হচ্ছে, তাদের প্যাডে প্রতিষেধকের ব্যাচ নম্বর উল্লেখ করে একটি চিঠি নিয়ে এসে যোগাযোগ করতে হবে। এর পরে ওই হাসপাতালে ছুটলে তাঁকে বলা হয়, প্রতিষেধকের ব্যাচ নম্বর এত আগে জানানো সম্ভব নয়। শিবিরের দিন যে ব্যাচ নম্বরের প্রতিষেধক থাকবে, সেটাই দেওয়া হবে। তবে ওই শিবির যে নিয়ম মেনেই হচ্ছে, হাসপাতাল তাদের প্যাডে তা উল্লেখ করে দেয়।
এর পরে ‘পারমিশন মে বি গ্রান্টেড’ লিখে ওই চিঠি অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে পুরসভার যুগ্ম কমিশনারের দফতরে পাঠানো হয়। ওই উদ্যোক্তাকে ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর ও থানাতেও চিঠির প্রতিলিপি পাঠাতে হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি সাহায্যে শিবির করতে হলে নগরোন্নয়ন দফতর বা পুরসভায় আবেদন করতে হয়। কোথায় শিবির হচ্ছে, উদ্যোক্তা সংস্থার নাম, কত জন প্রতিষেধক নিতে চান, তা জানাতে হয়। কত জন চিকিৎসক, নার্স, টেকনিশিয়ান ও স্বাস্থ্যকর্মী উপস্থিত থাকবেন, তা-ও উল্লেখ করতে হয়। অনুমতি পাওয়ার পরে সেই তথ্য কোউইন পোর্টালে আপলোড করতে হয়। এর পরে ওই পোর্টাল থেকে একটি লগ-ইন আইডি এবং পাসওয়ার্ড মেলে, যার সাহায্যে লগ-ইন করে প্রতিষেধক পাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য আপলোড করলে সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, প্রতিষেধক নেওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে মেসেজ না এলে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়া উচিত। কোউইন পোর্টালে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধ শিবির থেকেই প্রতিষেধক নেওয়া উচিত। আধার বা ইমেল আইডি কাউকে জানানোর বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।