KMC Election 2021

KMC Election 2021: পুলিশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কমিশন

ভোটের শুরু থেকেই সব পক্ষের নজর ছিল পুলিশের ভূমিকার উপরে। কারণ, এই ভোটে বরাবরই কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার দাবি জানিয়ে এসেছে বিরোধী শিবির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২০
Share:

গন্ডগোলের পরে ফের শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। বড়বাজারের একটি বুথে। ছবি দেশকল্যাণ চৌধুরী

কলকাতার পুরভোটে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকাকে বিরোধী শিবির কাঠগড়ায় তুললেও তার বিপরীত অবস্থান নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তারা বলল, বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া রবিবার কলকাতা পুরসভার ভোট মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ। সেই সঙ্গে পুলিশের কাজেরও প্রশংসা করল তারা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রশ্নে পুলিশের ভূমিকায় তাঁরা যে সন্তুষ্ট, সেটাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন কমিশন-কর্তারা।

Advertisement

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কলকাতা পুর এলাকায় ভোটদানের হার ছিল ৬৩.৩৩%। কমিশন সূত্রের খবর, ২০১৫ সালে কলকাতা পুরভোটের ভোটদানের হার ছিল ৬৮.৫%।

এ দিন ভোটের শুরু থেকেই সব পক্ষের নজর ছিল পুলিশের ভূমিকার উপরে। কারণ, এই ভোটে বরাবরই কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার দাবি জানিয়ে এসেছে বিরোধী শিবির। ঘটনাচক্রে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে বার বার তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে কমিশনের অবস্থান ছিল, রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশই পুরভোটকে অশান্তিমুক্ত রাখতে দক্ষ। তাই এই ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। কমিশন এ কথা কলকাতা হাই কোর্টেও জানিয়েছিল। হাই কোর্ট কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল, ভোট পর্ব অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ রাখতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করতেই হবে। ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিনের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত তথ্য রিপোর্ট আকারে হাই কোর্টে জমা দেওয়ার কথা কমিশনের। সেই কারণে ভোটে কমিশন ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কমিশন-কর্তাদের তরফে এ দিন স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই।

Advertisement

ভোট শেষ হওয়ার পরে কমিশন এ দিনের ভোট পর্ব মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করেছে। পুলিশের ভূমিকার দরাজ প্রশংসা করেছেন কমিশন-কর্তারা। তাঁরা মনে করছেন, কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড় ধরনের কোনও সমস্যা কোথাও হয়নি। পুলিশ দক্ষতার সঙ্গেই কাজ করেছে সারা দিন। ৫৫টি ইভিএম বা বৈদ্যুতিক ভোটযন্ত্র খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেই সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হয় বলে কমিশন সূত্রের দাবি।

যদিও বিরোধীদের দাবি অন্য রকম। ঘটনাচক্রে, রাজ্যপালও এ দিন মন্তব্য করেছেন, “শান্তিপূর্ণ ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভোটারদের মনে কোনও ধরনের ভয় যাতে না-থাকে, তা-ও নিশ্চিত করা দরকার। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে আমি বোঝাতে চেয়েছিলাম, ভোট পর্ব যেন শান্তিপূর্ণ থাকে এবং তাতে যেন প্রশাসনের কোনও রকম হস্তক্ষেপ না-হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে যা দেখা গিয়েছে, তা আপনাদের এবং আমার কাছে পীড়াদায়ক।”

কমিশন সূত্রের দাবি, দু’জায়গায় বোমা জাতীয় কিছু ছোড়া হয়েছিল। একটি খন্না সিনেমার কাছে। তাতে কেউ আহত বা গ্রেফতার হননি, তদন্ত চলছে। অন্য ঘটনাটি ঘটেছে এপিসি রোড সংযোগস্থলে। তাতে তিন জন আহত হয়েছেন এবং এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা দিন ধরে কমিশন ৪৫৩টি অভিযোগ পেয়েছে। তার সবই তদন্ত করে নিষ্পত্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। সব মিলিয়ে এ দিন ১৯৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভোট শেষের পরে সৌরভ দাস জানান, ছোট অভিযোগ থাকলে সেক্টরকে পাঠানো হয়েছে। তাতে কাজ না-হলে অতিরিক্ত জেলাশাসক গিয়েছেন। পর্যবেক্ষক এবং বিশেষ পর্যবেক্ষকদেরও পাঠানো হয়েছে। যেখানে বেশি গোলমালের খবর এসেছে, সেখানে পুলিশের ডেপুটি কমিশনারদের যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কমিশন সব ধরনের অভিযোগই খতিয়ে দেখেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement