অয়না খাতুন। ফাইল ছবি।
জন্মের পর থেকেই শ্বাসকষ্ট এবং অপুষ্টিতে ভুগছিল শিশুটি। বার বার ফুসফুসে সংক্রমণও হচ্ছিল। শেষে ঝাড়খণ্ড থেকে শহরে আসা ছ’মাসের শিশুটির ডান দিকের ফুসফুসের খারাপ হয়ে যাওয়া অংশ বাদ দিয়ে তাকে প্রাণে বাঁচালএসএসকেএম হাসপাতাল।
সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সাহেবগঞ্জে ফিরেছে অয়না খাতুন নামে ওইএকরত্তি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ‘কনজেনিটাল পালমোনারি এয়ারওয়ে ম্যালফরমেশন’-এ আক্রান্তের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার ছাড়া উপায় নেই।অয়না জন্ম থেকেই ওই রোগে আক্রান্ত ছিল। তার ডান দিকের ফুসফুসে যে তিনটি ভাগ (লোব) থাকে, তার উপরের ভাগে (আপার লোব) সমস্যা দেখা দিয়েছিল। গর্ভেথাকাকালীনই সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ফুসফুসে হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হচ্ছিল। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রতি ৩০ হাজার শিশুরমধ্যে এক জনের এমন জন্মগত ত্রুটি দেখা যায়। ০.৭ শতাংশ ক্ষেত্রে এই সমস্যা থেকে ক্যানসারওহতে পারে।
পিজির শিশু শল্য বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক সুজয় পাল বলেন, ‘‘উপরের নষ্ট হওয়া লোবটিনীচের আরও দু’টি লোবকে এবং বাঁ দিকের ফুসফুসে চাপ দিচ্ছিল। তাতে সেগুলি ঠিক মতো কাজ করতে পারছিল না। তাই ফুসফুসেরখারাপ অংশটি বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।’’ সেই মতো সুজয়, তাঁর ইউনিটের চিকিৎসকেরা এবং অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য ও পেডিয়াট্রিক ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসক বিধান রায়ের দল প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ওই অস্ত্রোপচার করেন।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, নির্দিষ্ট ভাবে জানা না গেলেও জিনগত কারণেই শিশুরা এমন রোগে আক্রান্ত হয় বলে মনে করা হচ্ছে। গর্ভাবস্থায় পাঁচটি ধাপে ফুসফুসের বিকাশ হয়। এই রোগের ক্ষেত্রে ফুসফুসের বায়ুথলি (অ্যালভিওলাই) ও ক্ষুদ্র শ্বাসনালি স্বাভাবিকের মতো তৈরি হয় না। সুজয় বলেন, ‘‘অনেক সময়ে এমন সমস্যায় শিশু গর্ভেই মারা যায়। কারও ক্ষেত্রে জন্মের এক বছরের মধ্যে উপসর্গ নিয়ে আসে। ঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার না হলে মৃত্যুওহতে পারে।’’