প্রতীকী ছবি।
রদবদলের তালিকায় ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নাম রয়েছে তাঁর। অথচ, পুরসভার সাধারণ কর্মী থেকে প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান, কেউই নাকি তাঁকে চেনেন না। তিনি কে, কোথায় থাকেন, কী করেন— কিছুই জানা নেই কারও।
মঙ্গলবার প্রশাসনিক স্তরে রদবদল হয়েছে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায়। ওই দিন দুপুরে প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান পল্লব দাসের কাছে রদবদলের সেই তালিকা ইমেল করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই তালিকায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাপস চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির কথা লেখা রয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি, কে এই তাপস চক্রবর্তী। যা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে পুর মহলে। পল্লববাবু-সহ পুরসভার কর্তাব্যক্তিরা কেউই এই নামের কাউকে চেনেন না। এমনকি, পুলিশ-প্রশাসনও ওই ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেনি। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই তাপস চক্রবর্তী সম্পর্কে নানা জায়গায় খোঁজখবর করা শুরু হয়। কিন্তু রহস্যের উদ্ঘাটন এখনও হয়নি বলেই সূত্রের খবর।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায় প্রশাসনিক স্তরে রদবদল ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশাসকমণ্ডলীর বেশ কয়েক জন দক্ষ সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ পুরকর্তাদের একাংশ। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে ভাইস চেয়ারম্যানের পদে থাকা নামটির পরিচিতি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়ার এই ঘটনা।
পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এমনই এক জন অপরিচিত ব্যক্তিকে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে, যিনি আদৌ ওই পুর এলাকার বাসিন্দা কি না, সেটাই জানা যাচ্ছে না। তিনি কে, কী করেন, কখনও রাজনীতি করেছেন কি না— জানা যায়নি কিছুই। এমনকি, রদবদলের তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে ওই ব্যক্তি পুরকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি। সেটাই আরও ধোঁয়াশা তৈরি করেছে।
প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যেরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর থেকে ওই পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় ওই ব্যক্তি সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বুধবার রাত পর্যন্ত তাঁর কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। পুর আধিকারিকদের একাংশের কথায়, ‘‘এলাকায় সম্পূর্ণ অপরিচিত এক ব্যক্তি এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত হয়েছেন। যিনি এখনও পর্যন্ত প্রশাসকমণ্ডলীর সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ পর্যন্ত করেননি।’’ এ ক্ষেত্রে সোনারপুর এলাকার এক শ্রমিক নেতার নাম আলোচনায় উঠে এসেছে। তবে ওই শ্রমিক নেতার নাম তাপস হলেও পদবী চট্টোপাধ্যায়। পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই শ্রমিক নেতা এলাকায় পরিচিত মুখ। তিনি যদি রদবদলের তালিকায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে থাকতেন, তা হলে নিশ্চয়ই পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি।’’
পল্লববাবু বলেন, ‘‘রদবদলের পরে অনেক প্রশাসনিক সদস্যই আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু ওই নামের কেউ এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ করেননি। বিষয়টি আমিও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।’’